‘মানুষের মন থেকে নদীরা হারায়’

‘হৃদয়ে চমক আনা’ নদীকে প্রিয় মানুষের মতোই ভালোবেসে যাওয়া জীবনানন্দ লিখেছিলেন, ‘মানুষের মন থেকে নদীরা হারায়, শেষ হয়।’
ছবি: পলাশ খান/স্টার

'হৃদয়ে চমক আনা' নদীকে প্রিয় মানুষের মতোই ভালোবেসে যাওয়া জীবনানন্দ লিখেছিলেন, 'মানুষের মন থেকে নদীরা হারায়, শেষ হয়।'

এক সময়ের প্রমত্তা কালীগঙ্গাও এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। নদীতে স্রোত নেই। পানির ধারাও ক্ষীণ। নদীর এখানে-ওখানে জেগে উঠেছে চর।

স্থানীয়রা বলছেন, এখন বর্ষা মৌসুম ছাড়া বছরের প্রায় পুরোটা সময় পানিশূণ্য থাকে কালীগঙ্গা। নদীর বুকে জেগে ওঠা ছোট ছোট চরগুলো হয়ে ওঠে একেকটি কৃষিক্ষেত্র, গোচারণভূমি কিংবা শিশুদের খেলার জায়গা।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুসারে, নদীবিধৌত মানিকগঞ্জের বুক চিরে বয়ে গেছে পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও ইছামতীসহ মোট ১১টি নদী। ১ হাজার ৩৭৯ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জেলার ২৪১ কিলোমিটারই নদী এলাকা। এর ভেতর কালীগঙ্গার দৈর্ঘ্য ৭৮ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২৪২ মিটার।

দৌলতপুরের চর কাটারি এলাকায় যমুনার শাখা থেকে কালীগঙ্গা ঘিওর হয়ে আশাপুরের পাশ দিয়ে জাবরা, দূর্গাপুর ও তরা এলাকায় ধলেশ্বরীর সঙ্গে মিশেছে। এখান থেকে গালিন্দা, নবগ্রাম, চরঘোসতা, আলগির চর, শিমুলিয়ায় এসে পদ্মার সঙ্গে মিশেছে। এখান থেকে আরও খানিকটা এগিয়ে হাতিপাড়া, বালুখন্দ, পাতিলঝাপ, শল্লা হয়ে আলী নগরে এসে ধলেশ্বরীতে মিশেছে।

গত শতকের সত্তরের দশকেও কালীগঙ্গা হয়ে বড় বড় লঞ্চ-স্টিমার চলতো। কৃষিকাজ, গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি এই নদীর পানি খাওয়ার কাজেও ব্যবহার করতেন স্থানীয়রা।

এখন দখল-দূষণসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে কালীগঙ্গাকে প্রায় মৃতই বলা চলে। এর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় কৃষিতে। সেচেকাজের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর ভরসা করতে হয় এখানকার কৃষকদের। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ে। বাড়ে অনিশ্চয়তা।  

সম্প্রতি ছবিটি তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী পলাশ খান

 

Comments

The Daily Star  | English

Yunus urges young people to engage more in politics

Yunus made the call when a group of young political activists from different political parties of Norway called on him at the state guest house Jamuna today

38m ago