ডিজিটাল ব্যাংক চালু করতে চায় নগদ

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) লাইসেন্স ফেরত দিয়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ ডিজিটাল ব্যাংক চালু করতে চায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক, ডিজিটাল ব্যাংক,
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) লাইসেন্স ফেরত দিয়ে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ ডিজিটাল ব্যাংক চালু করতে চায়।

গতকাল বুধবার নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির বেশিরভাগ শেয়ারহোল্ডার ডিজিটাল ব্যাংকের পক্ষে থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ জন্য 'নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি' নামে শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার পর আমরা এমএফএসের লাইসেন্স নেব।'

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নগদ বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের অধীনে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজের জন্য 'অন্তর্বর্তীকালীন' অনুমোদন দিয়ে এমএফএস পরিষেবা দিয়ে আসছে।

নগদ নিজেকে 'বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের ডিজিটাল আর্থিক সেবা' হিসেবে পরিচয় দেয়। যদিও নগদে পোস্ট অফিসের কোনো মালিকানা নেই। কেবল নগদের আয়ের একটি অংশ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটি পায়।

গত ৩০ আগস্ট নগদ ফাইন্যান্সকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদ ফাইন্যান্সকে এমএফএস পরিচালনার অনুমতি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।

ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়ে নগদ কেন এত নিশ্চিত— তা জানতে চাইলে জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, সরকার ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, 'খুব শিগগিরই বোঝা যাবে (নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাবে কি না)। যদি তা না হয় তবে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এমএফএস লাইসেন্স পাওয়ার বিকল্পও আছে। নগদ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে লাইসেন্স পেতে পারে।'

তানভীর এ মিশুক বলেন, 'আমরা এনবিএফআইয়ের (লাইসেন্স) জন্য আবেদন করেছিলাম। কারণ, সে সময় ডিজিটাল ব্যাংকগুলোর জন্য গাইডলাইন ছিল না। মুনাফা অর্জন (এনবিএফআই হিসেবে) খুব কঠিন হবে। কারণ বিনিয়োগের রিটার্ন খুব কম।'

প্রতিষ্ঠানটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) জন্য ঋণের কথা ভাবছে, উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশের অনেক এসএমইর এক বা দুই দিনের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রয়োজন। তাদের উচ্চসুদে ঋণ নিতে হয়। তাই আমরা তাদের জন্য কম সুদে প্রয়োজনীয় ঋণের ব্যবস্থা করতে চাই।'

নগদ ডিজিটাল ব্যাংকে বিমার পাশাপাশি সঞ্চয়ের ব্যবস্থাও রাখা হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'নগদ ২০২৫ সালের মধ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে চায়। ডিজিটাল ব্যাংক গঠিত হলে তা সম্ভব হবে।'

নগদের বেশিরভাগ শেয়ারহোল্ডার ডিজিটাল ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হবেন উল্লেখ করে মিশুক বলেন, 'নগদের বর্তমান শেয়ারহোল্ডার সামিট গ্রুপও নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।'

তিনি মনে করেন, সম্প্রতি দ্রুত বর্ধনশীল 'ইউনিকর্ন' হিসেবে 'নগদ' স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলাদেশে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসার পথ সুগম হবে।

বর্তমানে সারাদেশে আড়াই লাখ এজেন্টের পাশাপাশি নগদের ৮ কোটিরও বেশি গ্রাহক প্রতিদিন ১ হাজার কোটি টাকার লেনদেন করছেন জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, 'অনুমোদন পেলে ডিজিটাল ব্যাংকের দ্রুত সম্প্রসারণে আমরা এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করবো।'

Comments