কর আইনকে বোধগম্য করতে কাজ করছে রাজস্ব বোর্ড
নতুন আয়কর আইনকে আরও বেশি পাঠযোগ্য ও বোধগম্য করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
তিনি বলেন, 'আইনটি ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। তাই এই পর্যায়ে সব বিষয় লক্ষ্য করা যায়নি। আমরা দেখছি নতুন আইনের কিছু ক্ষেত্রে আরও কিছু বিষয়ে বোধগম্য করা প্রয়োজন।'
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে 'জাতীয় কর দিবস-২০২৩' উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর বাতিল করে আয়কর আইন ২০২৩ গত জুনে কার্যকর করা হয়। করদাতারা এই আইনকে পুরোপুরি স্বাগত জানাননি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, 'নতুন আয়কর আইনকে ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদের সময় অনেকের সঙ্গে পরামর্শ করেছি। আমরা একটি নিখুঁত আইন তৈরির চেষ্টা করেছিলাম।'
'অনেকের করযোগ্য আয় থাকলেও তারা কর দিতে চান না। তারা কর অফিসে যেতে ভয় পান' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে করদাতারা ভয় পাচ্ছেন না। এনবিআর কর্মকর্তাদের করদাতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।'
বাংলাদেশে নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা ৯৪ লাখ হলেও কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা কম।
গত ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা দেওয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখের একটু বেশি।
এনবিআরের তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৩৬ লাখ করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি।
সেমিনারে এনবিআরের করনীতিবিষয়ক সদস্য সামস উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'গত ১২ বছরে আয়কর আদায় তিনগুণ বেড়েছে।'
তিনি জানান, ২০১১-১২ অর্থবছরে আয়কর আদায়ের পরিমাণ ছিল ২৯ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১১ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা।
তার মতে, 'করের পরিধি বাড়ানো ও করসেবা সহজ করার মাধ্যমে আয়কর আদায়ে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যাচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সত্ত্বেও গত অর্থবছরে আয়কর সংগ্রহ বেড়েছে।'
অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন বলেন, 'করদাতাদের যদি কর দেওয়ার দায়িত্ব ও এতে তাদের লাভ-ক্ষতির বিষয়ে সচেতন করা যায় তাহলে তারা কর দিতে উৎসাহী হবেন।'
আয়কর আইন বাংলায় অনুবাদ হওয়ায় তা বোঝা সহজ হবে বলেও মনে করেন তিনি।
Comments