৪ মাসে এডিপির ১ শতাংশেরও কম খরচ করেছে ৪ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ

চলতি অর্থবছরের ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে ৪টি এখনো বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় প্রাপ্ত বরাদ্দের ১ শতাংশও ব্যয় করতে পারেনি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ৪ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ হচ্ছে, শিল্প মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)।

এর মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি পয়সাও খরচ করেনি। শিল্প মন্ত্রণালয় বরাদ্দের শূন্য দশমিক ২৯ শতাংশ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ এবং আইআরডি শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ ব্যয় করেছে।

আইএমইডি রিপোর্ট অনুসারে, সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সেতু বিভাগ উন্নয়ন বাজেটের ৩৭ শতাংশ খরচ করেছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় খরচ করেছে মাত্র ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

বাজেটের ৫৫ শতাংশ ব্যয় করে ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তালিকার শীর্ষে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে সেতু বিভাগ।

আইএমইডির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাঁচাতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে আমদানি কমে যাওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে।

আমদানির কারণে রিজার্ভে চাপ পড়ায় সরকার কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে শিথিলতা এনেছে এবং আমদানি প্রক্রিয়া কঠোর করেছে।

গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে পরিকল্পনা সচিব মো. মামুন-আল-রশিদ বলেন, 'খরচ কম হওয়ার অর্থ এটা না যে মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলো একেবারেই কাজ করছে না। অনেক সময় প্রক্রিয়াগত কারণেও দেরি হয়।'

তিনি বলেন, কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ নতুন কোনো প্রকল্প হাতে নিলে বিলের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে সময় লেগে যায়।

আইএমইডির এক কর্মকর্তা বলেন, অনেক সময় প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি কম হয় তহবিল ছাড় না হওয়ায়। এমন কয়েকটি প্রকল্পও রয়েছে।

কম এডিপি বাস্তবায়নের কারণ জানতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ডিসেম্বরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে একটি পর্যালোচনা সভা করবে বলে জানা গেছে।

মো. মামুন-আল-রশিদ বলেন, 'প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনতে আমরা এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। প্রকল্পগুলো কেন বিলম্বিত হচ্ছে আমরা তা খতিয়ে দেখব।'

জুলাই-অক্টোবরে দেশের উন্নয়ন ব্যয় ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। তবে এই সময়ে বৈদেশিক সাহায্য ব্যয়ের হার ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে সরকার বৈদেশিক সাহায্য থেকে ১৩ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। গত অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে এই খরচ ছিল ৯ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা সচিব বলেন, 'আমাদের সংস্থাগুলো বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ভালো ভূমিকা পালন করছে।'

সামগ্রিকভাবে জুলাই-অক্টোবরে এডিপি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য মোট বরাদ্দ ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকার ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরের পরে এবারের খরচটি সর্বনিম্ন।

অগ্রগতির গতি কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন মো. মামুন-আল-রশিদ।

তিনি বলেন, 'করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এখনও এডিপি কেন বড়ছে না তা জানার চেষ্টা করছি। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবশ্যই নেব।'

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

Every beat of my patriotic heart, every spark of my nation building energy, every iota of my common sense, every conclusion of my rational thinking compels me to most ardently, passionately and humbly appeal to Prof Yunus not to resign from the position of holding the helm of the nation at this crucial time.

6h ago