অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ১৬ শতাংশ

অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ১৬ শতাংশ
প্রতীকী ছবি

গত অর্থবছরে দেশের ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং উৎস থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ১৬ শতাংশ বেড়েছে। রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় সরকারি খরচ মেটাতে ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাদ দিলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ২১৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৩ শতাংশ বা ৯৭ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা ঋন নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। বিশ্লেষকরা বলেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ  গ্রহণ মূলিস্ফীতিকে উষ্কে দিতে পারে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে ঋণ দেওয়ার জন্য টাকা ছাপানোয় বাজারে নতুন টাকা আসছে। বাজারে চাহিদা তৈরি হবে। এ কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।'

তিনি বলেন, 'সরকার যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতির ওপর খুব একটা প্রভাব পড়বে না।'

'নতুন অর্থবছরে উদ্বেগ এটাই । সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেক ঋণ নেওয়া বেড়েছে। প্রয়োজনীয় রাজস্ব আদায়ে ব্যর্থতা এর মূল কারণ।

অর্থনৈতিক শ্লথগতি ও সরকারের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) টানা ১১ বছর ধরে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। বছরে সংগ্রহ বেড়েছে মাত্র ৮ শতাংশ।

২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সরকার। গত অর্থ বছরে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে

ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করেছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। নিয়েছে ঋণ ৭ শতাংশের বেশি।

ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা।

নতুন অর্থবছরের প্রথম ৪ দিনে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৩ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্রমাগত ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে যে, সরকারের আর্থিক পরিসর সংকুচিত হচ্ছে।'

'বাজেটের আকার বেড়ে যাওয়ায় চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারের বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হবে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'সরকার আর্থিক চাপে আছে। মনে হচ্ছে ঋণ নেওয়া ছাড়া এর কোনো বিকল্প নেই।'

চলতি অর্থবছরের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট বাস্তবায়নে সরকার দেশি-বিদেশি উৎস থেকে প্রায় ২ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

এর মধ্যে ৬০ শতাংশ দেশীয় উৎস, বিশেষ করে ব্যাংক থেকে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

তার মতে, ব্যাংকগুলো ইতোমধ্যে তারল্য সংকটে আছে। এই খাত থেকে উচ্চ পরিমাণের ঋণ বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগকে প্রভাবিত করতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

8h ago