২০২৬ সালের পরও শুল্ক সুবিধা পেতে জাপানের সঙ্গে আলোচনা

জাপানে শুল্ক সুবিধা
ছবি: সংগৃহীত

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় আসার পরও শুল্ক সুবিধা ধরে রাখতে জাপানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সইয়ের জন্য আলোচনা শুরু করেছে সরকার।

গতকাল বৃহস্পতিবার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, 'ইপিএ না হলে ২০২৬ সালের পর পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে ১৮ শতাংশের বেশি শুল্ক দিতে হবে।'

২০২৬ সালের আগে চুক্তি না হলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দেশগুলোর কাছে দ্বিপাক্ষিকভাবে শুল্ক সুবিধা নিতে হবে।

গত মাসে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও তিন বছরের জন্য স্বল্পোন্নত দেশের শুল্ক সুবিধা দিতে রাজি হয়েছে।

সে হিসেবে স্বল্পোন্নত দেশের শুল্ক সুবিধা ধরে রাখতে বাংলাদেশকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে।

বাংলাদেশ ইপিএ, সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি ও মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির মতো চুক্তি সইয়ের জন্য বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করছে।

এশিয়ায় জাপানই একমাত্র দেশ যেখানে স্বল্পোন্নত দেশের শুল্ক সুবিধার কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় এক দশক আগে ১০০ কোটি ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাপানে পণ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৯০ কোটি ডলার। একই সময়ে আমদানি ছিল ২০২ কোটি ডলার।

এই পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় যে জাপান বাংলাদেশের জন্য ক্রমবর্ধমান রপ্তানি গন্তব্য এবং জাপানি বিনিয়োগকারীরাও এ দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।

জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) জরিপে দেখা গেছে, উভয় দেশে কাজ করছে এমন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮৫ শতাংশ চায় সরকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করুক।

সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, 'দুই দেশই ইপিএ চুক্তি সইয়ে রাজি হয়েছে।'

চুক্তিতে শুল্ক ছাড়াও বিনিয়োগ, পণ্য বাণিজ্য, বাণিজ্য প্রতিকার, রুলস অব অরিজিন, কাস্টমস প্রসিডিউর অ্যান্ড ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন, স্যানিটারি অ্যান্ড ফাইটোস্যানিটারি, শ্রম, ব্যবসায়িক পরিবেশ, স্বচ্ছতা, মেধাস্বত্ব ও ই-কমার্সসহ ১৭ খাত অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

তিনি জানান, আলোচনা শুরুর আগে গত বছর যৌথ সমীক্ষা দলের তিন দফা বৈঠক হয়।

২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আলোচনা শেষ করার লক্ষ্য আছে, যাতে ২০২৬ সালের নভেম্বরে মেয়াদ শেষের আগেই শুল্ক সুবিধা নিশ্চিত করা যায়।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, 'জাপান বাংলাদেশের কৌশলগত অংশীদার। টোকিওর সহায়তায় মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ও ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।'

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, 'ইপিএ সই হলে কোন দেশ কতটা লাভবান হবে তা বলা সম্ভব নয়। তবে এ থেকে উভয় দেশ সমান লাভবান হবে তা বলা যায়।'

তিনি আরও বলেন, 'ইপিএ চুক্তিতে শুল্ক ছাড়াও বাণিজ্য সহজীকরণ, শুল্ক-অশুল্ক বাধা দূর ও অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

NBR plans to roll back tax benefits for exporters

The prospect of reduced tax benefits has rattled exporters, already wrestling with shifting global trade dynamics, including fresh US tariffs

11h ago