দুর্ঘটনার বর্ণনা দিলেন ফারিণ

তাসনিয়া ফারিণ : রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে চলন্ত সিঁড়িতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ।
তাসনিয়া ফারিণ। ছবি: শেখ মেহেদী মোর্শেদ/স্টার

গত শুক্রবার রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে চলন্ত সিঁড়িতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। শপিংমলে চলন্ত সিঁড়ির একটি রড বের হয়ে তার পায়ে ঢুকে যায়। অনেক রক্তক্ষরণ হয়। তাৎক্ষণিক অভিনেত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর ফারিণ দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লিখেন, 'শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার আশে পাশে যমুনা ফিউচার পার্কের প্রথম ফ্লোর থেকে গ্রাউন্ড ফ্লোরে নামার সময় গেট দিয়ে ঢুকেই যে মেইন অ্যাক্সেলেটরটা, সেখানটায় আমার দুর্ঘটনা ঘটে। সিঁড়ির নিচে যে অ্যালুমিনিয়ামের নাকি স্টিলের সেটা জানি না, সে পাত খুলে বের হয়ে ধারালো কোণা আমার পায়ে আঘাত করে। আমি সিঁড়ির ডান পাশে ছিলাম। আর ওটা ছিল ঊর্ধমুখী।'

তিনি আরও লিখেন, 'আমার পরনের প্যান্ট ছিঁড়ে যায় অনেকটুকু আর পায়ের বিভিন্ন স্থানে ছিলে যায় ও ডিপ কাট হয়, যেটা পরবর্তীতে টের পাই। কিন্তু ওই মুহূর্তের শুধু একটা ইমেজ আমার মাথায় ঘুরে ফিরে বারবার আসছে, তা হলো কিছু বোঝার আগে সবাই গগনবিদারী চিৎকার করে উঠলো আর আমি দেখলাম ডান পা স্ক্র্যাচ করে পায়ের পাশ দিয়ে মাঝখান হয়ে বাম পায়ের ওপরের দিকে একটা পাত ঢুকে যাচ্ছে আর চলন্ত সিঁড়িটিও আমাকে আরও সেদিকেই ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে!'

'যদি গতকাল কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমাকে আমার ভাই পেছন থেকে টান দিয়ে না সরাত বা আমার বাবা যদি আমাদের দুই জনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে না দিত আমি জানি না আজকে এই স্ট্যাটাস লেখার জন্য আমি বেঁচে থাকতাম কিনা।'

ঘটনার বর্ণনা আরও যোগ করে বলেন, 'মজার ব্যাপার হলো আমার এই ঘটনাকে আমি অ্যাকসিডেন্ট মানতে নারাজ। কারণ আমার এই ঘটনা ঘটার কমপক্ষে পনের মিনিট আগে আরেক ব্যক্তির সঙ্গে একই ঘটনা ঘটে। তার পায়ের মাংস ভেদ করে ওই পাতের কোণা ঢুকে যায়। উনি নিজে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে লোকজনকে নাকি সাবধান করছিলেন এবং দায়িত্ববান কাউকে খুঁজছিলেন। শেষে কাউকে না পেয়ে হেল্প ডেস্ক-এ যান এবং এরমধ্যে আমার এই ঘটনা ঘটে। সঙ্গে আরও একজন ভুক্তভোগী খুঁজে পাই।'

'আমার চিৎকার চেঁচামেচিতে ফাইনালি একজন স্টাফ আসেন এবং অনেকবার বলার পর ম্যানেজার কল করেন। ততক্ষণে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে যাচ্ছে আর ব্যথার চেয়ে বেশি ফিল হচ্ছিল হিউমিলিয়েশন। ওখানে কোনো সিনক্রিয়েট করার চেয়ে আমার মনে হয়েছে ঠান্ডা মাথায় এটার সমাধান করা দরকার। তাই আমি বলার পর দুজন কর্মচারী আমাদের তিন জন আহত ব্যক্তি ও তাদের সঙ্গে যারা ছিলেন সবাইকে বেজমেন্ট ১-এ নিয়ে যান।'

'আমাদের ধারণা ছিল নিশ্চয়ই দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আশ্চর্য বিষয় হলো এত বড় মলে কোনো অ্যাম্বুলেন্স অথবা ফাস্ট রেসপন্ডার তো দূরে থাক একটা ফাস্ট এইড বক্স-ও নেই!! পনের বিশ মিনিট তারা শুধু এই ফার্মেসি সেই ফার্মেসি ফোন করলো। কেউ নাকি দোকান ছেড়ে আসতে পারবেন না। অবশেষে আধা ঘণ্টা পর একজন আসেন আর ওই দুই ব্যক্তির চিকিৎসা করেন।'

'কিন্তু ফিমেল ডক্টর ছাড়া আমার চিকিৎসা সম্ভব ছিল না। এর মধ্যে আমার ভাইকে পাঠালাম একটা ট্রাউজার কিনে আনার জন্য। যমুনা ফিউচার পার্কের কর্তৃপক্ষের মতে এই দুর্ঘটনা নাকি বেশি লোক ওঠার কারণে হয়েছে! তার মানে কি আপনারা আগে থেকেই জানতেন? নাকি ধারণ ক্ষমতার বেশি লোড নিয়ে আগে থেকেই এই অবস্থায় ছিল তা আপনারা টেরই পাননি? আর একজনের সঙ্গে এটা হওয়ার পরও কেন কোনো অ্যাকশন নেননি আপনারা?'

'অ্যাস্কেলেটর-এর দায়িত্বে থাকা কাউকে ডাকতে বললে বলে সে আসেনি। আর আমার এই পরিস্থিতিতে তারা আমাকে চা-কফি অফার করেন যেখানে আমি বসার মতো পরিস্থিতিতে নেই।'

Comments

The Daily Star  | English

Muslin’s revival weaves past into present

On a golden summer morning in Rupganj, Narayanganj, the sound of handlooms echoes from tin-roofed sheds nestled amid winding village paths and open fields.

16h ago