শাকিব খান কমার্শিয়াল সিনেমার অপরিহার্য নায়ক: মাহফুজ আহমেদ
![শাকিব খান কমার্শিয়াল সিনেমার অপরিহার্য নায়ক: মাহফুজ আহমেদ শাকিব খান কমার্শিয়াল সিনেমার অপরিহার্য নায়ক: মাহফুজ আহমেদ](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2023/07/13/361067494_817101849827532_7053396745973110602_n.jpg?itok=mjObzAB5×tamp=1689234672)
মাহফুজ আহমেদ। নব্বই দশকে টিভি নাটকে তার উত্থান। একসময় শীর্ষ নায়কদের একজন বনে যান তিনি। তারপর পথচলা শুরু করেন চলচ্চিত্রে। শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারি, জিরো ডিগ্রী, জয়যাত্রা, লাল সবুজসহ বেশ কিছু প্রশংসিত সিনেমায় অভিনয় করেন।
৮ বছর পর প্রহেলিকা দিয়ে অভিনয়ে ফিরেছেন। ঈদে মুক্তি পাওয়া এই চলচ্চিত্রটি বেশ সাড়া ফেলেছে দর্শকদের মাঝে।
গত মঙ্গলবার রাতে তিনি এসেছিলেন দ্য ডেইলি স্টার অফিসে। প্রহেলিকাসহ জীবনের নানা গল্প বলেছেন একান্ত আলাপচারিতায়।
ঈদে মুক্তি প্রাপ্ত সিনেমাগুলো দেখতে দর্শকরা হলমুখি হচ্ছেন, দ্বিতীয় সপ্তাহে এসেও সেই ধারা অব্যাহত আছে, একটা উৎসব শুরু হয়ে গেছে ঢাকাই সিনেমায়। এটাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2023/07/13/360855297_607710257872839_1596475700677503508_n.jpg?itok=VpLoKtaI×tamp=1689234770)
মাহফুজ আহমেদ: এটাই তো বাঙালি সংস্কৃতি। বহু বছরের রীতি এটা, ঈদে সিনেমা মুক্তি পাবে আর দর্শকরা দলবেঁধে হলে যাবেন। আমরা শিল্পীরাও এটাই চাই। প্রতিটি সিনেমাপ্রেমিরা এটা চান। হল মালিকরাও চান। সিনেমার মঙ্গল যারা প্রত্যাশা করেন, তারা এটাই চান। কিন্তু ভালো সিনেমা মুক্তি না পেলে দর্শকরা তখন মুখ ফিরিয়ে নেন। এবার ঈদের মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর প্রতি দর্শকদের যে রকম ভালোবাসা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা খুব ইতিবাচক। আমার খুব ভালো লাগছে। বাংলাদেশের সিনেমা হলের এই সুন্দর পরিবেশটাই দেখতে চেয়েছিলাম। তা হয়েছে। এজন্য দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
প্রহেলিকা আপনার সিনেমা, দর্শকদের কাছ থেকে কী রকম ভালোবাসা পাচ্ছেন?
মাহফুজ আহমেদ: দর্শকদের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আমার মায়ের বয়সী দর্শকরা প্রহেলিকা দেখে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, আমার জন্য মন ভরে দোয়া করেছেন, আমি মনে করি জীবনে যদি কোনো পুণ্য করি তার প্রাপ্য ওটা। পরিবার নিয়ে মানুষজন প্রহেলিকা দেখতে আসছেন। তারা ভূয়সী প্রশংসা করছেন। এই মুগ্ধতার ভাষা আমার জানা নাই। ৮ বছর পর অভিনয়ে ফিরেছি। কী হবে কী হবে না এইরকম না ভেবে মন দিয়ে শুধু অভিনয়ই করেছি। কিন্তু প্রহেলিকা আমাকে দিয়েছে মানুষের ভালোবাসা। আমার জীবন এখন প্রহেলিকাময়।
শাকিব খান, আফরান নিশোর সিনেমা মুক্তি পেয়েছে এবারের ঈদে, তাদের সম্পর্কে মন্তব্য?
মাহফুজ আহমেদ: দেখুন, শাকিব খানের সঙ্গে আমার খুব ভালো একটা সম্পর্ক। একজন মানুষ একাই বছরের পর বছর ধরে ঢাকাই সিনেমাকে টেনে নিয়ে আসছেন। তার অবদান অনেক। এখনো অভিনয় করছেন। তার একটা বিশাল ভক্ত আছে। আমি মনে করি, শাকিব খান কমার্শিয়াল সিনেমার অপরিহার্য নায়ক। এই কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তার প্রিয়তমার জন্য শুভকামনা। অন্যদিকে আফরান নিশো কাছের ছোট ভাই। ভীষণ ভালো অভিনয় করে। তার প্রথম সিনেমা সুড়ঙ্গ মুক্তি পেয়েছে। দর্শকরা দেখছেন। নিশোর জন্য ভালোবাসা। সুড়ঙ্গ নিশোর জন্য বড় একটি উপহার। আমার কথা হচ্ছে শত ফুল ফুটতে দাও। ফুল যদি একটিই হতো তাহলে গোলাপ ছাড়া অন্য ফুলের দরকার ছিল না। আমাদের গোলাপ যেমন দরকার, বুনোফুলও দরকার।
নাচে-গানে ভরপুর না কি গল্পে ভরপুর, কোনো ধরণের সিনেমা এদেশে দরকার?
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/medium_204/public/images/2023/07/13/361092886_295324629529363_7132102060126609183_n.jpg?itok=8Q5dkoWK×tamp=1689234770)
মাহফুজ আহমেদ: সব ধরণের সিনেমা এদেশে দরকার। কেউ নাচে-গানে ভরপুর সিনেমা পছন্দ করেন। কেউ সিরিয়াস সিনেমা পছন্দ করেন। কেউ হাসির সিনেমা পছন্দ করেন। কেউ ভালোবাসার সিনেমা দেখতে চান। একই রকম হলে তো হবে না। এবারের ঈদে তাই হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন গল্পের সিনেমা মুক্তি পেয়েছে এবং দর্শকরা তাদের পছন্দের সিনেমাগুলো দেখছেন।
৮ বছর পর সিনেমায় ফেরার জন্য কি রকম প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল?
মাহফুজ আহমেদ: অনেকদিনের প্রস্তুতি ছিল। চয়নিকা চৌধুরীর কাছ থেকে প্রস্তাবটি পাবার পর অনেক ভেবেছি। চরিত্র নিয়ে নিজে নিজে খেলেছি। আমার ভেতরে চরিত্রটির বাসা বেঁধেছি। মনা হবার জন্য যা যা প্রস্তুতি দরকার সব করেছি। দর্শকরা যেন আমার ভেতরে মনাকে খোঁজে পায় সেই চেষ্টা করেছি।
একসময় দর্শকরা আপনাকে চৈতাপাগল, নুরুল হুদা নামে ডেকেছেন আলোচিত চরিত্রে অভিনয়ের জন্য, প্রহেলিকা করার পর দর্শকরা মনা নামে ডাকছেন, কেমন লাগছে?
মাহফুজ আহমেদ: এটা তো মানুষের ভালোবাসা। অভিনেতা হয়েছি বলেই তারা ডেকেছেন। আমি মনে করি দীর্ঘ অভিনয় জীবনে কিছু ভালো কাজ হয়ত করেছি। চৈতাপাগল আমার জন্য সেরা একটি কাজ। নুরুল হুদা সেরা কাজের একটি। প্রহেলিকার মনা চরিত্রটিও সেরা কাজের একটি।
গ্রামে জন্ম ও বেড়ে উঠা, সেই গ্রামকে মিস করেন?
মাহফুজ আহমেদ: গ্রাম আমার সঙ্গেই থাকে। যেখানেই যাই গ্রাম সঙ্গে থাকে। গ্রামকে কখনো ভুলা সম্ভব? বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যাওয়া, বৃষ্টির দিনে বন্ধুরা মিলে কলাপাতা মাথায় দিয়ে স্কুলে যাওয়া, আহারে, সেইসব দিন কি ভুলতে পারব? গ্রাম আমার কাছে প্রেম, ভালোবাসা সবকিছু। গ্রামের সঙ্গে এখনো আমার দারুণ যোগাযোগ আছে।
এতদূর আসার পেছনে সাফল্যর মূলমন্ত্র কী?
মাহফুজ আহমেদ: আজীবন চেষ্টা করে যাওয়া। আপনি যে স্বপ্নের পেছনে ছুটছেন তার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। জীবন একটা জার্নি, জীবন চলমান। আমি যতদিন আনন্দ নিয়ে একটি কাজ করবো ততদিন পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। জীবন চলার পথে আনন্দটাও দরকার। তাহলে সাফল্য আসবেই।
Comments