ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: বাগেরহাটে মুষলধারে বৃষ্টি
ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং'র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে।
আজ সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টির সঙ্গে হালকা ও মাঝারি দমকা হাওয়াও রয়েছে।
সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি বাড়ার সম্ভাবনা আছে। ফলে ঝড় যতো এগিয়ে আসছে উপকূলবাসীর আতঙ্ক ততো বাড়ছে।
স্থানীয়রা প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় মালপত্র গুছিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য।
শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী এলাকার মো. রকিব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল সকাল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। রাতে মুষলধারায় বৃষ্টি নামে। এখনো লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। ঝড়ের সময় কী হবে জানি না।'
মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহর বুনিয়া এলাকার দুলু শেখ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিত্রাং যদি সিডরের মতো শক্তিশালী হয়, তাহলে খুবই বিপদে পড়ে যাব। নদীবেষ্টিত এই ইউনিয়নকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার কোনো বাঁধ নেই। জলোচ্ছ্বাস হলে জানমালের অনেক ক্ষতির আশঙ্কা আছে।'
'জেলার বেশির ভাগ এলাকায় মানুষ শঙ্কায় আছেন' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'শুনেছি, প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।'
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, '৩৪৪ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। নির্দেশনা পাওয়া মাত্রই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।'
তিনি আরও বলেন, '২৯৮ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন দেখা দিলেই সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হবে।'
কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে উপকূলীয় এলাকায় জনসাধারণকে সাবধানে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন মোংলার স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লে. কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন জামান।
তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বঙ্গোপসাগর ও কয়েকটি নদ-নদীতে থাকা নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলে ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে।'
আক্রান্তদের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র অথবা কোস্ট গার্ডের বেজ ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধও করেন তিনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং'র রূপ নিয়েছে। ক্রমশ এর শক্তি বাড়ছে।
উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
Comments