ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিবপুরের ৫৩ একর কলাবাগান
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার কলা চাষীদের ৫৩ একর জমির কলাবাগান ও ১০ হেক্টর সবজিখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শিবপুর উপজেলার কৃষি ও সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন সাদেক দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের দুলালপুর, দরগারবন্ধ, পাড়াতলা, লাখপুর, আলীনগর এবং সাধারচর ইউনিয়নের সৈদেরখোলা, দক্ষিণ সাধারচর, উত্তর সাধারচর, শৈশাদী এলাকায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার কৃষক কলা চাষ করেছিলেন।
গতকাল সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে এসব কলাবাগানের অধিকাংশ গাছই নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
সাধারচর ইউনিয়নের সৈদরখোলা গ্ৰামের কৃষক আলামিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এবার দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৪ শতাধিক চাঁপা কলা চাষ করেছিলাম। সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি মিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ করেছি। ৭-৮ মাস ধরে গাছের পরিচর্যা করেছি। আর ১ মাস পরেই পরিপক্ব কলা বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে। আমার ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে এবং ৮ মাসের পরিশ্রম পুরোটাই বৃথা গেল।'
একই ইউনিয়নের দক্ষিণ সাধারচর গ্রামের চাষী আব্দুল মোমেন বলেন, 'আমার এক বিঘা জমিতে নরসিংদীর বিখ্যাত অমৃত সাগর কলা চাষ করেছিলাম। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আমার ও আমার ভাইয়ের ৭০০ এর বেশি অমৃত সাগর কলার বাগান চুরমার করে দিল। এখন আমি কী খাবো, আর কী পরবো, কিছুরই দিশা খুঁজে পাচ্ছি না। আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।'
জানতে চাইলে সাধারচর ইউনিয়বের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজমুল হোসেন বলেন, 'আমাদের এই অঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষকই কলা চাষ করে জীবনযাপন করেন। এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কলা বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লাখ লাখ টাকা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কলা চাষীদের অপূরণীয় ক্ষতি করে দিয়েছে। এসব কৃষক বাঁচাতে সরকারের কাছে আমি সহায়তা দাবি করছি।'
শিবপুর উপজেলা কৃষি ও সমপ্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন সাদেক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে শিবপুর উপজেলায় প্রায় ৫৩ হেক্টর জমিতে কলা ও ১০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দপ্তরে রিপোর্ট করা হয়েছে। এটা অপূরণীয় ক্ষতি।'
Comments