কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাটে বন্যায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার পানিবন্দি লোকজন গবাদি পশুপাখি নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র, সরকারি রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী গ্রামে বন্যাদুর্গতরা বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতিতে ২ লাখেরও বেশি বন্যাদুর্গত মানুষ খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে আছেন। ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর থেকে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন বন্যাদুর্গতরা।

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার পানিবন্দি লোকজন গবাদি পশুপাখি নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র, সরকারি রাস্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন।

ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ২৫টি চর ও নদী তীরবর্তী ৩০টি গ্রাম দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় বৃহস্পতিবার থেকে ১ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর ফলিমারী গ্রামের বন্যাদূর্গত রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমাদের বন্যার পানির সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হচ্ছে। রান্নার অভাবে শুকনো খাবার খাচ্ছি। অনেকে শুকনো খাবারও পাচ্ছেন না। এলাকার নলকূপগুলো পানির নিচে তলিয়ে থাকায় বিশুদ্ধ পানির জন্য কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারী গ্রামে বন্যাদুর্গতরা বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জোনাব আলী বলেন, 'আমার ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার থেকে ৬৫০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে আছেন তারা। বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে গরু-ছাগলের সঙ্গে ঠাসাঠাসি করে রাতে থাকতে হচ্ছে।'

এদিকে লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও পাটগ্রাম উপজেলায় ১৬টি ইউনিয়নে ১৭টি চর ও নদী তীরবর্তী ২২টি গ্রাম তিস্তা ও ধরলা নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় পানিবন্দি রয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ মানুষ।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারডোব গ্রামের বন্যাদূর্গত নাজের আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাড়ির ভেতরে-বাইরে শুধু পানি আর পানি। ঘরের ভেতর দিয়ে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছি।'

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের বন্যাদূর্গত জিয়ারুল ইসলাম বলেন, 'নদীর পানির স্রোতে আমার ঘরের বেড়া, দরজা, ১০টি মুরগি ভেসে গেছে। বাড়ি-ঘর ছেড়ে সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছি।'

জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কাছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও নগদ অর্থ মজুদ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বন্য্যাদূর্গতদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।'

বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আমি নিজে দূর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছি। দূর্গতের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Raushan Ershad

Raushan Ershad says she won’t participate in polls

Leader of the Opposition and JP Chief Patron Raushan Ershad today said she will not participate in the upcoming election

52m ago