বন্যায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৩ জেলায় অন্তত ৫৭৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত

ছবি: স্টার

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৩ জেলায় অন্তত ৫৭৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানি কমে গেলেও এখনো পর্যন্ত অনেক স্কুলে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়নি।

চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় প্রায় ৮৮ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দেড় সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাতকানিয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাসহ মোট ২৭০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ৩৪টিতে একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। পানি নেমে গেলেও বেশিরভাগ স্কুলের ভবন এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার উপযোগী নয়। ক্লাস শুরু হতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা।

সাতকানিয়া উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মাহবুব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের উপজেলার অধিকাংশ স্কুল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক ভবন এখনো একাডেমিক কার্যক্রমের উপযোগী না...স্কুল ভবনগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে।'

ক্লাস শুরু হতে আরও ২ থেকে ৭ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, 'কিছু প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। সেগুলোতে আবার ক্লাস শুরু করতে বেশি সময় লাগবে।'

এদিকে, গত রোববার থেকে চট্টগ্রাম নগরীসহ কয়েকটি উপজেলায় প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা।

বন্যায় কক্সবাজারে ২৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবগুলোতেই ইতোমধ্যে ক্লাস শুরু হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলার এইচএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, 'কোমরসমান পানির কারণে আমরা স্কুল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলাম। এক সপ্তাহ পর গত শনিবার আমরা আবার স্কুল খুলেছি।'

স্কুলের অধিকাংশ আসবাবপত্র পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রাঙামাটিতে ৭১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন, আসবাব ও অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এখনো পর্যন্ত ক্লাস শুরু করা যায়নি।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'স্কুল চত্বর থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। কিন্তু ভবনে গর্ত ও কাদা রয়ে যাওয়ায় এসব স্কুলে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।'

২-৩ দিনের মধ্যে সবগুলো স্কুলে আবার পাঠদান শুরু হবে বলে জানান তিনি।

বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারও। রাঙামাটির বেলাইছড়ি উপজেলার চাপচর বয়াম বলেন, 'আমাদের বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমার ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তার সব পাঠ্যবই ভেসে গেছে।'

জুলাইছড়ি উপজেলার উৎপল চাকমা বলেন, 'আমার মেয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। বন্যার কারণে তার স্কুল এখনো খোলা হয়নি।'

(প্রতিবেদনটি দ্য ডেইলি স্টারের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও রাঙ্গামাটির নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য থেকে তৈরি করা হয়েছে।)

Comments

The Daily Star  | English

Govt to review media outlets owned by AL ministers, MPs

The adviser made these remarks during a stakeholders' meeting of the Department of Films and Publications

2h ago