সরকার কোনো সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করতে বলছে না: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করতে বলছে না।
আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত 'জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক সভায় এ কথা বলেন তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, 'প্রতিদিন হাজার হাজার বক্তা বিভিন্ন কথা বলছেন। এমনকি মিথ্যা কথা পর্যন্ত প্রচার করছেন। তবুও সরকার কারও মুখ বন্ধ করেনি।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের ইতিহাসে বর্তমান সময়ে মানুষ সর্বোচ্চ বাক-স্বাধীনতা ভোগ করছেন। আমরা দেখছি অনেকে আজেবাজে কথা বলেন, ফেসবুকে মিথ্যা নিউজ প্রচার করছেন। কিন্তু আমরা কারও ফেসবুকে বন্ধ করিনি। কারণ আমরা বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।'
'গণমাধ্যম এখন যা ইচ্ছে তা লিখতে পারছেন,' বলেন তিনি।
প্রেস সচিব আরও বলেন, 'গণমাধ্যমে যা ঘটছে তাতে সরকার অনুঘটক না। সরকার বলছে না যে একে চাকরিচ্যুত কর, একে বাদ দিয়ে একে নাও। গত ১৫ বছর ধরে সাংবাদিকরা যে বয়ান সাংবাদিকতা করেছে, অন্য দেশে হলে বিপ্লবের পর এসব গণমাধ্যমগুলোকে বন্ধ করে দিত। সরকার এসব করেনি।'
'আমরা দেখেছেন কীভাবে গুম ও খুনকে জাস্টিফাই করা হয়েছে। পৃথিবীতে এর চেয়ে (গুম ও ক্রসফায়ার) বড় কোনো ক্রাইম নাই,' বলেন তিনি।
শফিকুল আলম আরও বলেন, 'একজনকে গুম করা হলে, ক্রসফায়ার করা হলে অন্যরা ভয়ে কথা বলে না। গুম করার মানে হলো সমাজকে ভয়ের চাদরে ঢেকে দেওয়া। সরকারের এসব বয়ান আগে সাংবাদিকরা প্রচার করেছিল।'
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ডিজিটাল মাধ্যমে অনেকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন। এতে নারী, শিশুসহ অনেকে আক্রান্ত হন। এসব বন্ধ করার নাম করে বিগত সরকারের সময় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নামে পুরো বাংলাদেশের মানুষের মুখ বন্ধ করতে চেয়েছে। আমরা সেটা স্থগিত করে নতুন একটা আইন করছি। আপনারা নিশ্চিত থাকেন এতে সবার অধিকার সুরক্ষা থাকবে।'
সভায় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, 'সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষ চ্যানেলেগুলোকে তাদের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেনি।'
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আরও বলেন, 'সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করার পর পৃথক তিনটি টেলিভিশন চ্যানেলের তিনজন সাংবাদিককে চাকুরিচ্যুতি এবং একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদ প্রচার সাময়িক বন্ধের ঘটনায় সরকারের কোনো ভূমিকা ছিল না।'
তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে অনেকে পরোক্ষভাবে চ্যানেলগুলোর অন্যায় চাকুরিচ্যুতিকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যদিও কোনো চ্যানেলেই এসবের আনুষ্ঠানিক কোনো কারণ জানায়নি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এ ঘটনায় সরকারকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।'
সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রাপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ এবং সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান।
Comments