প্রতি বছর বন্যায় বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ প্লাবিত হয়: গবেষণা

ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি ভবিষ্যতে আরও খারাপ হবে বলে একটি নতুন সমীক্ষায় জানানো হয়েছে। 

গ্রান্থাম রিসার্চ ইনস্টিটিউট অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্ট এবং সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ ইকোনমিক্স প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী কার্বণ নিঃসরণ অব্যাহত থাকলে এবং জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতি বাড়তে থাকলে ২০৭০ থেকে ২০৯৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশের নদীপ্রবাহ সর্বনিম্ন ১৬ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বন্যায় প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রায় ৫৫-৬০ শতাংশ জলমগ্ন হয় এবং ১ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের ক্ষতি হয়।

দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর ফলে গুরুতর মানবিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত সংকটেরও আশঙ্কা রয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টিপাতের অনিয়মিত ধরণ, আকস্মিক বন্যার তীব্রতা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে এই সমস্যার শিকড় অনেক গভীরে। 

গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাবের কারণে পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে খারাপের দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্বব্যাপী জরুরি ও বড় ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বৃহত্তর অভিযোজন পদক্ষেপ এবং স্থিতিস্থাপকতা-নির্মাণ ছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে বন্যার মানবিক ও অর্থনৈতিক ব্যয়, যা ইতিমধ্যেই অনেক বেশি, তা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বন্যার কারণে ক্রমবর্ধমান মৃত্যু এবং অর্থনৈতিক ধ্বংস ইতোমধ্যে অনুভূত হয়।

১৯৭১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে, ৭৮টি বন্যায় ৪১ হাজার ৭৮৩ জনের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে এবং মোট ১২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। ২০২২ সালের বন্যায় ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে এবং ৭.৩ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে, প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতের বন্যা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের জন্য কম কার্বন নিঃসরণ পথ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বান্দরবানে সাম্প্রতিক বন্যার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে মানুষের মধ্যে বন্যা মোকাবিলা করার ক্ষমতা কমেছে। এতে করে মানুষের সুস্থতা ও সমৃদ্ধির ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে এমন বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্র ০.২৫ শতাংশের জন্য দায়ী হলেও দেশটির ওপর এর প্রভাব মারাত্মক। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য সমন্বিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন, তা না হলে বাংলাদেশের পরিণতি মারাত্মক হবে।

বাংলাদেশে কার্বন নির্গমনে দায়ী মূলত কৃষি এবং জ্বালানি খাত। কৃষিখাতে ৪৪ শতাংশ এবং জ্বালানিখাতে ৩৯ শতাংশ কার্বণ নিঃসরণ হয়। ২০৪০ সালে এটি সর্বোচ্চ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Expatriates' remittance helps Bangladesh make turnaround: Yunus

It is the expatriates who help sustain the country, says the chief adviser

1h ago