ঘূর্ণিঝড় রিমালে মৃত্যু বেড়ে ১০, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ৩০ হাজারের বেশি

প্রবল বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল বিপর্যস্ত।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উত্তাল কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ছবি: টিটু দাস/স্টার

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ঘূর্ণিঝড়টি গতরাতে দেশের উপকূলে আঘাত হানে। এর আঘাতে ৩০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং লাখখানেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

গতরাত থেকে আজ সোমবার দুপুর পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ শওকত আলী নিশ্চিত করেছেন।

এর মধ্যে ভোলায় ৩ জন, বরিশালে ৩ জন ও পটুয়াখালীতে একজন মারা গেছেন। 

বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ শওকত আলী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বরিশালে নিহত ৩ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ২ জন ও বাকেরগঞ্জে একজন মারা গেছেন।

তিনি বলেন, 'বেশিরভাগই ঘরের দেয়াল ধসে কিংবা গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন।'

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অনেক জায়গায় গাছ ভেঙে পড়েছে। ছবি: টিটু দাস/স্টার

ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'যোগাযোগ বিঘ্নিত হওয়ায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনো জানা যায়নি।'

শওকত আলী বলেন, 'প্রবল বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতে পুরো  অঞ্চল বিপর্যস্ত।'

গতরাতে ঘূর্ণিঝড় রিমাল স্থলভাগে আঘাতের পর উপকূলীয় এলাকায় প্রচণ্ড ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। আজ বিকেলে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়েছে, কিন্তু বাতাস ও বৃষ্টি এখনো অব্যাহত।

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে খুলনায় দুজন মারা গেছেন বলে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ এএফপিকে জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ে বিভাগে ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় ৩১ হাজার বাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে।'

বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিপন কুমারের বরাত দিয়ে ডেইলি স্টারের খুলনা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নে একজন মারা গেছেন।

ওই ইউনিয়নের গড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের লালচাঁদ মোড়ল (৩৬) গতরাতে বাড়িতে গাছ পড়ে মারা যান।

চট্টগ্রামে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় নগরীর একটি বাড়ির দেয়াল ধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন হওয়ায় পুরো পরিস্থিতি সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি।'

পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এবং এ অঞ্চলে আর কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় সোয়া ১ কোটি মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন আছেন বলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী বিশ্বনাথ সিকদার জানিয়েছেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করব।'

Comments