‘১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, মোবাইলে চার্জ নেই’

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সীমানাপ্রাচীরের ওপর উপড়ে পড়েছে গাছ। ছবি: সোহরাব হোসেন/স্টার

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে আজ সোমবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ নেই বগুড়ার সবগুলো উপজেলায়। আশপাশের অন্যান্য জেলাগুলোর গ্রাহকরাও ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ করেছেন। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝড় না থামা পর্যন্ত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।

বগুড়া জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুতের দুইটি সমিতি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আজ সকাল ৮টা থেকে বগুড়ার ১২টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। শুধুমাত্র শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু রাখা হয়েছে।

বগুড়া শহরের রহমান নগরের রশিদা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল ৭টার পর বিদ্যুৎ চলে যায়। এর মধ্যেই ট্যাংকের পানি শেষ হয়ে গেছে। রান্না-বান্না, এমন কি ওয়াশরুমে ব্যবহারের পানিও নেই।'

বগুড়া ঝাউতলা এলাকার এমএফএস (মোবাইলে অর্থ লেনদেন) এজেন্ট রফিকুল ইসলাম বলেন, 'সকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। ব্যবসা প্রায় বন্ধ। যে কয়জন কাস্টমার এসেছেন নেটওয়ার্কে সমস্যার কারণে অনেকে ফিরে গেছেন।'

বগুড়া মফিজ পাগলার মোড়ে অবস্থিত একটি রেস্তোরাঁর মালিক তহমিনা পারভীন শ্যামলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটানা ৬ ঘণ্টা জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়েছে। এর পর থেকে জেনারেটর ঠিকমতো চলছে না। রাতে রেস্তোরাঁয় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন আছে। জেনারেটর না চললে রেস্টুরেন্ট বন্ধ রাখতে হবে।'

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে বগুড়া শহরে বিদ্যুৎ চালুর চেষ্টা চলছে। তবে রাত পৌনে ৯টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। 

বগুড়ার পাশের জেলা গাইবান্ধার পরিস্থিতিও প্রায় একই রকম। এখানেও সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের বাসিন্দা আনিকা মেহজাবিন বলেন, 'বিদ্যুৎ নেই। বাথরুমে পানি নেই। মোবাইলে চার্জ শেষ হয়ে গেছে। রাতে বিদ্যুৎ না এলে বাচ্চাদের নিয়ে খুবই সমস্যায় পড়ব।'

বিদ্যুৎ সংযোগ কখন স্বাভাবিক হবে জানতে চাইলে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. মনোয়ারুল ইসলাম ফিরোজী দ্য ডেইলি স্টার বলেন, ঝড়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর অধীন ছয়টি উপজেলায় সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বন্ধ। বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ লাইনের ওপর গাছপালা পড়ে আছে। ঝড় থামলে গাছপালা অপসারণ করে বিদ্যুৎ চালু করা হবে।

অন্যদিকে বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ (ছয়টি উপজেলা) এর ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার রথীন্দ্র নাথ বর্মণ বলেন, 'ঝড় না থাকলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। ঝড়ের মধ্যে লাইন ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

অন্যদিকে, বগুড়া শহরে বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)-এর কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গাইবান্ধার ছয় উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মিথুরাম রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঝড়ের অনেক জায়গায় গাছ পড়ে লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ আমরা দুবার লাইন চালু করার চেষ্টা করেছি; কিন্তু প্রত্যেকবার লাইন বন্ধ হয়ে গেছে। ঝড় না থামায় বিদ্যুৎ চালু করা যাচ্ছে না।'

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

12h ago