ভারতের দিকে এগোচ্ছে দানা, ঢাকায় বৃষ্টি থাকতে পারে শুক্রবার পর্যন্ত

স্যাটেলাইট ইমেজ

প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে রাজধানী ঢাকার আকাশ সকাল থেকেই মেঘলা। মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ঝরছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঝড়টি ভারতের দিকে এগোচ্ছে। এটি বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডে আসার সম্ভাবনা নেই।

আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, দানার যে গতিপথ, তাতে এর কেন্দ্র ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে।

আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে এটি উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা দেশেই হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হতে পারে। খুলনা, চট্টগ্রাম ও উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।'

তিনি বলেন, 'অতি ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। মাঝে মাঝে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। বাতাসের গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার হতে পারে।'

'ঢাকায় আজ ও আগামীকাল বৃষ্টি হবে। আমরা মনে করছি, আগামীকালই ঢাকায় বৃষ্টির প্রবণতা কমে আসবে,' বলেন তিনি।

এর প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জোয়ারের আশঙ্কা আছে। উপকূলীয় এলাকায় তিন নম্বর স্থানীয় সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বজলুর রশিদ বলেন, 'সংকেত হয়তো আর বাড়বে না। তবে সাগর উত্তাল থাকায় আমরা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছি।'

তিনি বলেন, 'যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।'

'এ ছাড়া, দেশের অন্যান্য জায়গায় দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যে কারণে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছি আমরা,' যোগ করেন তিনি।

বজলুর রশিদ বলেন, 'ঝড়টি উত্তরপশ্চিম দিকে এগোচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা হয়ে এটি ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যাবে। যেহেতু এটি পশ্চিমের দিকে যাবে, আমরা আরও শঙ্কামুক্ত হবো। স্থলভাগে আঘাত হানার পরও আমাদের এদিকে আসার সম্ভাবনা নেই।'

আশ্রয়কেন্দ্রে ভারতের ১১ লাখ মানুষ

ভারতের পূর্ব উপকূলীয় প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে সরে গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ আশঙ্কা করছে, ঘূর্ণিঝড় দানা ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

এই দুই রাজ্যে প্রায় ১৫ কোটি মানুষের বসবাস। কলকাতাসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য প্রধান বিমানবন্দরগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। কলকাতায় ইতোমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

আশঙ্কা করা হচ্ছে শুক্রবার সকালের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি কয়লা রপ্তানির জন্য সুপরিচিত বন্দর ধামারায় আঘাত হানতে পারে। এই বন্দর কলকাতা থেকে প্রায় ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত।

পূর্বাভাস অনুসারে, ভারতের উপকূলীয় এলাকায় ঢেউয়ের উচ্চতা সাড়ে ছয় ফুট হতে পারে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওডিশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুকেশ মাহালিং এএফপিকে বলেন, 'উপকূলীয় এলাকা থেকে ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে সাইক্লোন শেল্টারে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।'

পুরিতে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের।

পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী বঙ্কিম চন্দ্র হাজরা বলেন, 'এখন পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

6h ago