ঢলের পানির চাপ কুশিয়ারায়, বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে তুলনামূলক দ্রুতগতিতে। জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদ পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় পানির স্তর বিপৎসীমার ১৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে ৯১ সেন্টিমিটার বেড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে সিলেট ও মৌলভীবাজারের নিম্নাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। দ্রুত পানি বাড়তে থাকায় কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে প্লাবিত হয়েছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল।

তবে গত চব্বিশ ঘণ্টায় সিলেট অঞ্চল এবং ভারতের আসাম-মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় সামগ্রিক পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

পাউবো'র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, আজ সোমবার সকাল ৯টায় সিলেটের সুরমা নদীর পানির গতকালের মতো আজও একইরকম থাকলেও কুশিয়ারা নদীর পানি বেশ দ্রুতগতিতে বাড়ছে এবং ইতোমধ্যে এটি সুনামগঞ্জের একটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

সিলেট নগরী পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে, যা গতকালের তুলনায় অপরিবর্তিত। কানাইঘাট পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার নিচে, যেখানে গতকাল সন্ধ্যায় ছিল ৮৫ সেন্টিমিটার নিচে, অর্থাৎ মাত্র ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছে তুলনামূলক দ্রুতগতিতে। জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদ পয়েন্টে আজ সকাল ৯টায় পানির স্তর বিপৎসীমার ১৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে ৯১ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা গতকাল সন্ধ্যার তুলনায় কিছুটা কম।

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার মার্কুলি পয়েন্টে আজ সকাল থেকে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে, যা এই অঞ্চলে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির শঙ্কা সৃষ্টি করছে।

এদিকে, হবিগঞ্জের খোয়াই নদীতে পানি কমে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। গতকাল রাতে এটি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ সকালে পরিস্থিতির উন্নতি দেখা গেছে।

মৌলভীবাজার জেলার মনু নদীতে পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে- মনু রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় ২৭ সেন্টিমিটার এবং জেলা সদর এলাকায় ৬৭ সেন্টিমিটার। যদিও সার্বিকভাবে জেলার পরিস্থিতি এখনো স্থিতিশীল রয়েছে।

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় গতরাত থেকে কুশিয়ারা নদীরক্ষা বাঁধ ভেঙে এবং কিছু জায়গায় বাঁধ উপচে প্রবল বেগে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও জকিগঞ্জ পৌরশহরসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে নদী উপচে পানি ঢুকছে।

রাত আড়াইটার দিকে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের পাশ দিয়ে প্রথমে ডাইক ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। আজ ভোরে বাখরশাল এবং সকাল ৮টার দিকে খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকায় ডাইক ভেঙে যায়।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, 'পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে যে, কিছু জায়গায় পানি বিপৎসীমার দুই মিটারেরও বেশি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বাঁধ উপচে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আমরা সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছি, তবে এখন পর্যন্ত কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেনি।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, 'কুশিয়ারার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে পাউবোর কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। উজানে আসামে শনিবার ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় কুশিয়ারায় চাপ বেড়েছে। তবে গতকাল সেদিকে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আশা করা যাচ্ছে কালকের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Remittance-rich Sylhet ranks poorest in new index

Long seen as the “London of Bangladesh” for its foreign earnings and opulent villas, Sylhet has been dealt a sobering blow. The country’s first Multidimensional Poverty Index (MPI) has revealed that the division is, in fact, the poorest in Bangladesh when measured by access to education, healthc

3h ago