হাতিয়ায় মেঘনা উত্তাল, জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ হাতিয়া ও মেঘনার তীরবর্তী সুবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মেঘনা নদী ও হাতিয়া সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে।
হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় উদ্বেগের সঙ্গে সময় কাটছে জেলেদের। ছবি: স্টার

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ হাতিয়া ও মেঘনার তীরবর্তী সুবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জে ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মেঘনা নদী ও হাতিয়া সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে।

শনিবার রাত থেকে নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। রোববার বিকেল পর্যন্ত বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি অব্যাহত ছিল।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কায়সার খসরু আজ বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাতাসের গতিবেগ বেড়ে ঘণ্টায় ২৭ কিলোমিটার হয়েছে। আজ রাতে বাতাস আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা আছে। এ কারণে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ, সুখচর, নলচর, হরনি, চানন্দী, চরকিং, জাহাজমারা, চরইশ্বরসহ বেড়িবাঁধহীন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

আজ দুপুরে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আফসার দিনাজ বলেন ৯১ কিলোমিটার আয়তনের নিঝুমদ্বীপে কোনো বেড়িবাঁধ নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিঝুমদ্বীপের ৪০ হাজার বাসিন্দা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। শনিবার রাতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১ হাজার মানুষ ছিলেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে আজ সকালে তারা বাড়ি ফিরে যান।

বুড়িরচর ইউপি চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম আজ বিকেলে জানান, তার ইউনিয়নে বেড়িবাঁধের ১২টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ। জলোচ্ছ্বাস হলে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলো দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

হরনি ইউপি চেয়ারম্যান ও হাতিয়া মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আক্তার হোসেন বলেন, শনিবার রাতে বেড়িবাঁধের বাইরের ৪০০-৫০০ মানুষ তাদের মালামাল ও গবাদি পশু নিয়ে স্থানীয় সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় অনেকেই সকালে চলে গেছেন। তবে স্থানীয় লোকজনের মাঝে জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক রয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মানস মন্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন হাতিয়ায় ২ হাজার ৮২৭ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। জেলেরা তাদের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার নিয়ে নিরাপদে আছেন।

হাতিয়ার সহকারী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. আলাউদ্দিন আজ বিকেলে বলেন, বাতাসের গতিবেগ ৭ কিলোমিটার থেকে বেড়ে ২৭ কিলোমিটার হয়েছে। রাতে জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট উচু জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

হাতিয়ার ইউএনও মো. কায়সার খসরু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, জোয়ারের সময় বাতাসের গতিবেগ বেড়ে গিয়ে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। উপজেলা প্রশাসন ঢালচর, চর ঘাসিয়া ও নিঝুমদ্বীপের লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। চরঘাসিয়া ও ঢালচরে ৫ হাজার মানুষকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এছাড়া বেড়িবাঁধের বাইরের ও বেড়িবাঁধহীন এলাকার লোকজনকে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Professor Muhammad Yunus for a road map to the reforms and the next general election.

1h ago