‘বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ক্যাপাসিটি চার্জের সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ছবি: সংগৃহীত

দেশে বিদ্যুতের দাম খুচরা পর্যায়ে আরও ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। সরকারের নির্বাহী আদেশে ভোক্তা পর্যায়ে গত জানুয়ারি থেকে ৩ দফায় ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ দাম বাড়ানো হলো।

এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জ্বালানি খাতে ভর্তুকি নিয়ে আইএমএফের শর্ত পূরণে সরকার দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে বলে ধারণা করছি। তাদের শর্ত পূরণের সহজ উপায় হিসেবে এই কাজটি করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আর কোনো ব্যাখ্যা বা যুক্তি নেই।'

গ্রাহকদের ওপর বোঝা চাপিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জ্বালানি প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই বাড়তি মূল্য নিয়ে জ্বালানির জন্য যে ডলার দরকার, সেটা নিশ্চিত করা যাবে না। গ্যাস ও তেলের ঘাটতিতে আসন্ন গ্রীষ্মে বড় রকমের লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা আছে। বিদ্যুতের বাড়তি দাম নিয়েও এর কোনো ইতিবাচক ফলাফল নিশ্চিত করার সুযোগ নেই।'

তার মতে, ভর্তুকি সমন্বয়ের চেষ্টা হিসেবে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, 'এভাবে জনগণকে জিম্মি করে ভর্তুকি সমন্বয়ের কোনো মানে হয় না। তার কারণ হলো, যে ভর্তুকি বিদ্যুৎ খাতকে দিতে হয়, সেই ভর্তুকি দেওয়ার জন্য আসলে জনগণ দায়ী নয়।'

তিনি বলেন, 'বিদ্যুতের উচ্চ মূল্যের পেছনে উচ্চ হারে ক্যাপাসিটি চার্জ দায়ী। এদিকে নজর না দিয়ে খুব সহজভাবে এটিকে ভোক্তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া বিদ্যুৎ খাতের মূল সমস্যা। সেই সমস্যাকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে।'

এর ফলে, আবাসিক পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি ঘটবে। একই সঙ্গে কৃষিতে সেচের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বোরো ধানের মূল্যবৃদ্ধি হবে। শিল্পপণ্যের ক্ষেত্রেও ৩ বারে ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি হলো। এর প্রতিফলন সেখানেও দেখা যাবে।

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফল হিসেবে মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা সাধারণ জনগণের ওপর চাপ আরও বেড়ে যাবে। এভাবে ভোক্তাদের ওপর বার বার চাপ না বাড়িয়ে উচিত ছিল, এক্ষেত্রে মূল যে কারণ বা সমস্যা, সেই ব্যাপারগুলোকে ধারাবাহিকভাবে চিহ্নিত করা।

'আমরা আবারও যা দেখতে পেলাম, তা হলো- বিইআরসিকে পাশ কাটিয়ে সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আরেকবার মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এর মাধ্যমে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের যে যৌক্তিক ব্যাপারগুলো, বিইআরসি যেটা গণশুনানির মাধ্যমে করত বা জনগণের থেকে মতামত-মূল্যায়নের মাধ্যমে করা হতো, সেই বিষয়টিকেও আসলে একদিকে অবজ্ঞা করা হলো,' বলেন তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Abdul Hamid returns home after treatment in Thailand

Two police officials were withdrawn and two others suspended for negligence in duty regarding the former president's departure from the country

2h ago