সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৫ ঘণ্টায় ৬০ হাজার মে. টন ডিজেল খালাস

সাগরের তলদেশ দিয়ে তেল খালাস
মহেশখালী থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে স্থাপিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং। ছবি: সংগৃহীত

মহেশখালী থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে স্থাপিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে পাইপলাইনে ৩৫ ঘণ্টায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল খালাস করা হয়েছে। 

এই পাইপলাইন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ২৯০০ ঘনমিটার জ্বলানই তেল খালাস করা সম্ভব হচ্ছে। 

এতদিন পর্যন্ত ৬০ হাজার মেট্রিক টনের প্রতিটি জাহাজ থেকে ডিজেল খালাস করতে প্রায় ১০-১১ দিন সময় লাগত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বঙ্গোপসাগরে 'সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন' হওয়ায় এখন ডিজেল খালাসের সময় কমে এল।

এ পাইপলাইন প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এর আগে এসপিএমের অন্য একটি পাইপলাইন দিয়ে জাহাজ থেকে প্রায় ৮২ হাজার মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল খালাস করতে সময় লেগেছে ৪৯ ঘণ্টা।'

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা জানান, এতদিন ৩০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার জাহাজে করে জ্বালানি তেল আমদানি করা হতো। এখন এসপিএম প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আরও বড় জাহাজে করে জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা করছে বিপিসি। 

গভীর সাগরে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংটি স্থাপনের কারণে বিশ্বের সব বড় জাহাজে করে জ্বালানি তেল আমদানি সম্ভব হবে। 

গত ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত খালাস হওয়া ক্রুড অয়েলবাহী জাহাজটিতে আমদানি হয়েছিল প্রায় ৮২ হাজার মেট্রিক টন তেল।

আর গত ৫ ডিসেম্বর দুপুর ২টা ৪৮ মিনিটে 'এমটি জেগ অপর্ণা' জাহাজ থেকে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল খালাস শুরু হয়। ডিজেল খালাস শেষ হয় ৭ ডিসেম্বর সকাল ৮টায়।  

ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম): উইথ ডাবল পাইপলাইন প্রকল্পটি দেশের জ্বালানি তেল পরিবহনের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে পরিগণিত হবে। এখন থেকে আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল ও ডিজেল কোনো ধরনের সিস্টেম লস ছাড়াই দ্রুততম সময়ের মধ্যে খালাস করা সম্ভব হবে।'

কর্মকর্তারা জানান, এতদিন আমদানিকৃত জ্বালানি তেল খালাসের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙর থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারির জেটি পর্যন্ত প্রতিটন ডিজেল পরিবহনে খরচ হতো ৬৪ টাকা ৪০ পয়সা। আর ৩০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার মাদার ভেসেলে করে জ্বালানি তেল খালাস করতে ৮-১০টি লাইটার জাহাজ প্রয়োজন হতো। 

অপরদিকে, ক্রুড অয়েল পরিবহন করতে প্রতি মেট্রিক টনে খরচ হতো ৭ ডলার ২৫ সেন্ট। 
 
ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমান জানান, প্রকল্পটির কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে বঙ্গোপসাগরের বহিঃনোঙর থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারি পর্যন্ত লাইটার জাহাজে জ্বালানি তেল পরিবহন কমে যাবে। এতে প্রতি বছর সাশ্রয় হবে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। 

এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ১২৪  কোটি টাকা। বিপিসি, বাংলাদেশ সরকার এবং চীনা এক্সিম ব্যাংক এতে অর্থায়ন করেছে বলে বিপিসির কর্মকর্তারা জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Suspected robbers attack police camp on the Meghna

Suspected robbers launched an assault on a newly established police camp in Munshiganj’s Gajaria upazila yesterday, sparking a gunfight between them and law enforcers yesterday.

7h ago