আহত বানর নিজে এসে চিকিৎসা নিলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

আহত অবস্থায় হাসপাতালের প্রধান ফটকে বসে ছিল বানরটি। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় এক আহত বানর নিজেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বানরটি প্রায় এক মাস আগে খাবারের খোঁজে বা দলছুট হয়ে বন থেকে লোকালয়ে চলে আসে। গত শনিবার বিকেলে বানরটি সারা শরীরে ক্ষত নিয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের সামনে প্রধান ফটকে হাজির হয়।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. নূর উদ্দিন ওই সময় স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বের হচ্ছিলেন। তিনি আহত বানরটিকে জরুরি বিভাগে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।

আহত বানরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

নূর উদ্দিন বিষয়টি অবগত করেন উপজেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ এবং বন বিভাগের কর্মকর্তাদের।

রোববার সকালে বানরটি আবারও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে উপস্থিত হয়। ডা. নূর উদ্দিন বানরটিকে ড্রেসিং করে দেন এবং উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের অবগত করেন।

এরপর আজও বানরটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এলে অবস্থা গুরুতর বিবেচনায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও বন্য প্রাণি সংরক্ষণ কর্মকর্তাদের জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে আসতে বলেন।

ডা. নূর উদ্দিন বলেন, 'বানরটিকে প্রথম দেখতে পাই শনিবার। তখন তার সারা শরীরে ক্ষত চিহ্ন ছিল। তাৎক্ষনিক জরুরি বিভাগে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেই এবং ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দেই।'

তিনি বলেন, 'এ ক্ষেত্রে একজন পশু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া ভালো। তাই আমি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাই। তারা বলেন, দেখছি কী করা যায়। কিন্তু, সেদিন আর আসেননি।'

বানরটির ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, 'এরপর রোববার সকালে দেখি বানরটি আবারও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপস্থিত। দেখলাম, তার ক্ষতস্থানের ব্যান্ডেজগুলো প্রায় উঠে গেছে। তাকে আবারও ড্রেসিং করে দেই। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের টেলিফোনে বিষয়টি জানালেও তারা আসেননি।'

'এরপর সোমবার বানরটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলে তার ক্ষতস্থানে ইনফেকশন সৃষ্টি হয়েছে দেখে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও বন্য প্রাণি সংরক্ষণ কর্মকর্তাকে জরুরিভিত্তিতে আসার জন্য অনুরোধ করি। এরপর তারা এসে বানরটিকে নিয়ে যান,' যোগ করেন তিনি।

বানরটি খুবই শান্ত প্রকৃতির উল্লেখ করে নূর উদ্দিন বলেন, 'যতবার বানরটিকে চিকিৎসা দিয়েছি, প্রত্যেকবারই শান্ত হয়ে বসে ছিল। তাছাড়া বানরটি নিজে নিজে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে শান্ত হয়ে প্রধান ফটকে বসে থাকতো।'

জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজু জানান, খবর পেয়ে তিনিসহ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে বানরটিকে নিয়ে এসেছেন এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।

তিনি বলেন, 'বানরটির শরীরে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে বানরটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।'

Comments

The Daily Star  | English
cyber security act

A law that gagged

Some made a differing comment, some drew a political cartoon and some made a joke online – and they all ended up in jail, in some cases for months. This is how the Digital Security Act (DSA) and later the Cyber Security Act (CSA) were used to gag freedom of expression and freedom of the press.

7h ago