কুয়াকাটা সৈকতে প্রতিদিন জমছে ২৩ কেজি অপচনশীল বর্জ্য: জরিপ

কুয়াকাটা সৈকতে দৈনিক প্রায় ২৩ কেজি অপচনশীল বর্জ্য জমছে। মৎস্যজীবী পরিবারের স্বেচ্ছাসেবী যুবকদের সংগঠন ‘ব্লু-গার্ড‘র সদস্যদের নমুনা জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।
কুয়াকাটা সৈকতে অপচনশীল বর্জ্য
কুয়াকাটা সৈকতে অপচনশীল আবর্জনা পরিষ্কারে ব্লু-গার্ডের সদস্যরা। ছবি: স্টার

কুয়াকাটা সৈকতে দৈনিক প্রায় ২৩ কেজি অপচনশীল বর্জ্য জমছে। মৎস্যজীবী পরিবারের স্বেচ্ছাসেবী যুবকদের সংগঠন 'ব্লু-গার্ড'র সদস্যদের নমুনা জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।

সংগঠনটি ২০২২ সালে প্রতি মাসে ৪ ঘণ্টা করে বছরে মোট ৪৮ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৩ কেজি বর্জ্য সৈকত থেকে অপসারণ করেছে। এসবের মধ্যে আছে প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন ব্যাগ, চিপস-চানাচুর-বিস্কুটের মোড়ক, ডাবের খোসা ও জেলেদের পরিত্যক্ত জাল।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা 'ইকোফিশ'র তত্ত্বাবধানে পরিচালিত 'ব্লু-গার্ড'র সদস্য মানিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুয়াকাটার সৈকত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। এখানে প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন। স্থানীয় জনগোষ্ঠী সাগরে মাছ ধরাসহ পর্যটন ব্যবসায় জড়িত। বিপুল সংখ্যক মানুষের পদচারণায় সৈকতটি ক্রমশ নোংরা হচ্ছে।'

তিনি জানান, ব্লু-গার্ডের সদস্যরা ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৪ ঘণ্টা করে বর্জ্য সংগ্রহ করেছেন।

'বছরে মোট ৪৮ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৩ কেজি বর্জ্য সৈকত থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৩ কেজি বর্জ্য সৈকতে ফেলা হচ্ছে, যা খুবই বিপজ্জনক।'

কুয়াকাটা সৈকতে অপচনশীল বর্জ্য
কুয়াকাটা সৈকতে অপচনশীল আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন ব্লু-গার্ডের সদস্যরা। ছবি: স্টার

তার মতে, 'নদী-সাগরের ওপর আমরা নির্ভরশীল। ক্ষতিকর প্লাস্টিক সামগ্রীসহ ময়লা-আবর্জনায় সাগরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। সাগরকে দূষণমুক্ত রাখতে সৈকত পরিষ্কারের জন্য আমরা ইকোফিশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি।'

ইকোফিশের গবেষণা সহযোগী সাগরিকা স্মৃতি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পৃথিবীর ৭১ ভাগজুড়ে আছে সাগর। একে দূষণমুক্ত রাখা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি।'

'জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সাগর দূষণ কমাতে ইউএসএআইডি'র অর্থায়নে ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের ইকোফিশ-২ কার্যক্রমে কলাপাড়ায় ২৪ জনকে ব্লু-গার্ডে নেওয়া হয়েছে।'

সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্লু-গার্ডের সদস্যরা ইকোফিশ থেকে সৈকত পরিষ্কার ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। তাদেরকে জার্সি, ট্রাউজার, ক্যাপ ও জুতাসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়েছে।

তারা জাটকা ও মা ইলিশ না ধরা এবং অনুমোদিত জাল দিয়ে মাছ ধরার বিষয়ে জেলেদের সচেতন করতেও কাজ করছেন।

ইকোফিশ কার্যক্রমের বিজ্ঞানী ড. মো. জলিলুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্লু-গার্ডের উদ্যোগটি উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করছে। আমরা নারীসহ ১০০ জনকে এ কাজে যুক্ত করেছি। এ বছর সেন্ট মার্টিন দ্বীপকেও ব্লু-গার্ডের কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Houses for homeless: A project destined to fall into ruin

At least a dozen homes built for the homeless and landless on a river island in Bogura’s Sariakandi upazila have been devoured by the Jamuna while dozens of others are under threat of being lost.

2h ago