তীব্র দাবদাহ, বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত যমুনার চরের জনজীবন
প্রচণ্ড দাবদাহে যমুনার বিস্তীর্ণ বালুচর বেশি উত্তপ্ত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার কৃষিজীবী মানুষ। তারা মাঠে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
নদী-ভাঙনে ঘর হারিয়ে যারা বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন তারা আরও বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। চর এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় কষ্টে আছেন তারা।
সিরাজগঞ্জের বেশ কয়েকটি চরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার হাট পাচিল গ্রামের লুকমিহান সর্দার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত বছর ভাঙনে ঘর হারিয়ে এখন বাঁধের ওপর বাস করছি। অস্থায়ী ঘরে তীব্র গরমে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।'
নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এখানকার বিস্তীর্ণ এলাকা বালুচরে পরিণত হয়েছে। খরতাপে বালুচর উত্তপ্ত হয়ে থাকছে। ফলে, চরে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে বলে জানান লুকমিহান।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বন্নির চরের আসমা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুর্গম চরের টিনশেড ঘরে দিনের বেলায় থাকা কঠিন। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।'
'দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। এসময় ঘরে থাকা কষ্টকর। স্বস্তির আশায় ঘরে না থেকে বড় গাছের ছায়ায় ছুটতে হয়,' যোগ করেন তিনি।
বন্নির চরের কৃষক আফসার ভুঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চরের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবী। গরমে জমিতে কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।'
দাবদাহে চরের জমিতে এক ঘণ্টা পর পর বিশ্রাম না নিলে কাজের শক্তি থাকে না। চরে ভুট্টা কাটা শুরু হয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের দাবদাহে জমিতে কাজ করতে যেতে অনেকেই সাহস পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
চরবাসীরা জানান, চরের মানুষের জীবন অনেক কঠিন ও কষ্টকর। বর্ষায় পানিবন্দি হয়ে থাকতে হয়, আবার প্রচণ্ড খরায় হাঁসফাঁস করতে হয়। প্রকৃতির বৈরী আচরণের কারণে প্রকৃতি নির্ভর চরের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
সিরাজগঞ্জে আবহাওয়া অফিস না থাকায় প্রতিদিনের তাপমাত্রার সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। সিরাজগঞ্জের পার্শ্ববতী পাবনার ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিলাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সারা দেশের মতো সিরাজগঞ্জেও তাপমাত্রা বেড়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪০ ডিগ্রির মধ্যে উঠানামা করছে।'
গত বছর এ সময় তাপমাত্রা প্রায় একই রকম থাকলেও এবার খরতাপ বেশি অনুভুত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন এভাবেই বাড়তে পারে। তবে বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা কমে যাবে।
Comments