মাসের শেষে নিম্নচাপ, তাপমাত্রা নামতে পারে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে

কুয়াশা কমেছে, শুক্রবার তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে
ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সময়ের চেয়ে এগিয়ে এসেছে আবহাওয়াচক্র। ফলে মধ্য অগ্রহায়ণে দেশের উত্তরাঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৫ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

যদিও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্য অঞ্চলগুলোতে এখনো আবহাওয়ার উষ্ণভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।

চলতি বছরের ২০ অক্টোবর দেশ থেকে বর্ষা (মৌসুমি বায়ু) বিদায় নিয়েছে। বৃষ্টিপাতের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বরে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ দশমিক ৪ শতাংশের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। যদিও রংপুর বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে কম এবং সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অক্টোবরে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে রাজশাহী বিভাগে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম। চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগে স্বাভাবিক পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে।

বিদুষী খনা বলে গেছেন—ঊন বর্ষায় দুনো শীত। খনার বচন অনুসারে এবার শীত কম পড়ার কথা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশ্লেষণও একই কথা বলছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভাষ্য, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এবার আগাম শীত নামলেও প্রায় পুরো ডিসেম্বরে আবহাওয়া থাকবে উষ্ণ। তবে শেষ ভাগে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে।

অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে একটি বা দুটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যার একটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে তাপমাত্রা পর্যায়ক্রমে কমে আসবে। ডিসেম্বরের শেষ ভাগে দেশের কোথাও কোথাও একটি বা দুটি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) কিংবা মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

আজ শুক্রবার আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে শীত মৌসুম চলে এলেও মাসজুড়ে উষ্ণ থাকবে আবহাওয়া। ধারণা করা হচ্ছে, ডিসেম্বরের শেষে গিয়ে সারা দেশে তাপমাত্রা শীতল হবে। ডিসেম্বরে না হয়ে আগামী বছরের জানুয়ারিতে গিয়েও শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। গড় তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।

আবহাওয়ার তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, নভেম্বরে সার্বিকভাবে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৯৮ দশমিক ১ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর আশে পাশের এলাকায় ৯ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। পরদিন সকাল ৬টায় এটি শ্রীলঙ্কা উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করে। ১১ নভেম্বর সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে উত্তর তামিল নাড়ু উপকূলে অবস্থান করে। ১২ নভেম্বর সুস্পষ্ট লঘুচাপ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ১৩ নভেম্বর গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর আশে পাশের এলাকায় ১৭ নভেম্বর আরেকটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়। ১৯ নভেম্বর এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের মধ্যাঞ্চলে অবস্থান করে। ২০ নভেম্বর ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় এটি নিম্নচাপে পরিণত হয়। পরদিন উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর পাশে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করে। ২২ নভেম্বর এটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপ আকারে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর পাশে অন্ধ্র উপকূল এবং তামিল নাড়ু উপকূলে অবস্থান করে। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে ২৩ নভেম্বর লঘুচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করে এবং ২৪ নভেম্বর গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে।

গত ২৯ নভেম্বর টেকনাফে এ মাসের দৈনিক সর্বোচ্চ ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ১ নভেম্বর কক্সবাজারে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২১ নভেম্বর তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Israel stands down alert after Iran missile launch

Israel hits nuclear sites, Iran strikes hospital as conflict escalates

22h ago