বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা আরও অন্তত ৫ দিন, অতি তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা

বিচ্ছিন্নভাবে চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া ও খুলনা বেল্টের কিছু জেলা অতি তীব্র তাপপ্রবাহের আওতায় চলে আসতে পারে।
ছবি: পলাশ খান/স্টার

সারা দেশেই বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী অন্তত ৫ দিনের মধ্যে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। এর পরে বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

আজ শনিবার দুপুরে আবহাওয়াবিদ আব্দুল হামিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '১৯ এপ্রিলের পরে মূলত চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এর আগে পর্যন্ত আবহাওয়া পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠা-নামা করতে পারে।'

আব্দুল হামিদ আরও বলেন, 'আজ আকাশ মেঘলা থাকায় সূর্যের আলো সরাসরি পড়ছে না। যে কারণে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত রয়েছে। যদি সরাসরি পড়তো তাহলে দিনের তাপমাত্রা বেড়ে যেত।'

আজ সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গরমের সময় ভারতের গুজরাট ও পার্শ্ববর্তী এলাকার তপ্ত বাতাস নানা পথ পার হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বাংলাদেশে আসে। এই প্রবেশদ্বার চুয়াডাঙ্গা ও এর কাছাকাছি এলাকাগুলো।'

'শীতের সময়ও ব্যাপারটা একই রকম। উত্তর গোলার্ধ থেকে আসা শীতল বায়ু বাংলাদেশ বা এ অঞ্চলে সোজা হয়ে ঢুকতে পারে না। এই বায়ুর একটি অংশ কাশ্মীর, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের একাংশ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে,' বলেন তিনি।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, মধ্য ও পূর্ব ভারতের তাপমাত্রা রয়েছে ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর প্রভাবে বাংলাদেশের তাপমাত্রা আরও বাড়লে বিচ্ছিন্নভাবে চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া ও খুলনা বেল্টের কিছু জেলা অতি তীব্র তাপপ্রবাহের আওতায় চলে আসতে পারে।

আজ শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সিনপটিক অবস্থা অনুযায়ী লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশে পাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ফলে সারা দেশের আবহাওয়া থাকবে মূলত শুষ্ক।

অধিদপ্তর আরও জানায়, খুলনা বিভাগ এবং ঢাকা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা ও পটুয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ।

উল্লেখ্য, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু, ৩৮ ডিগ্রি থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস মাঝারী, ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তীব্র ও ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিবেচনা করা হয়।

পশ্চিম হিমালয় ও আশে পাশের অঞ্চলে আগামীকালের পর থেকেই বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ভারতের আবহাওয়াবিদরা। তাদের ধারণা, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত হালকা এবং ১৮ এপ্রিলের পরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

ফলে পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, অন্ধ্র প্রদেশের উপকূলীয় এলাকা ও বিহার থেকে আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে তাপপ্রবাহ বিদায় নেবে।

Comments