দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে শঙ্কা

দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে শঙ্কা
প্রতীকী ছবি | সংগৃহীত

গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বাড়ছে। তবে এর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর পেছনে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ থাকতে পারে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে জেএন.১ ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশ করেছে কি না, তা খুঁজে বের করতে তারা সংক্রমিতদের নমুনা সংগ্রহ করে তা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠাচ্ছেন।

তাদের ভাষ্য, গত কয়েকদিনে সংক্রমণের হার হঠাৎ বাড়লেও চলতি মাসের মধ্যে তা কমে যেতে পারে। তবে ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে তা আবার বাড়তে পারে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেএন.১ ভ্যারিয়েন্টে কোনো বিপদ নেই। তবে সার্বিকভাবে আমরা অবশ্যই এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। এত অল্প সময়ের মধ্যে সংক্রমণের হারের এত দ্রুত বৃদ্ধি আমরা এর আগে দেখিনি।'

তবে এটাকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ষষ্ঠ ঢেউ বলা যাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'শীতকালে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক।'

বিশ্বব্যাপী সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই ভ্যারিয়েন্টে ঝুঁকি 'কম' এবং বিদ্যমান ভ্যাকসিন এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ডব্লিউএইচও ইতোমধ্যে জেএন.১-কে 'ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট' বা 'ভ্যারিয়েন্ট টু ওয়াচ ফর' হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে জেএন.১ ভ্যারিয়েন্টে কেউ সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যেহেতু ভারতে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে, তাই বাংলাদেশেও এটি আসতে পারে কিংবা ইতোমধ্যে এসেছে।

এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার ছিল শূন্য দশমিক ৬৬ শতাংশ। তবে গতকাল তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক ৯৮ শতাংশে।

ডিসেম্বরের শুরু থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত মাত্র পাঁচজনের করোনায় সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যায়। পরে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ জনে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যারা টিকা নিয়েছেন, তারা নতুন এই জেএন.১ ভ্যারিয়েন্ট থেকে সুরক্ষা পাবেন।'

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'লকডাউনের সময় মানুষ মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছেন। কিন্তু তারা এখন আর ভাইরাসকে ভয় পায় না বলে এগুলোর প্রতি আগ্রহী নন।'

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আমরা সতর্ক... আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং দেশের প্রবেশপথগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছি। কিন্তু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।'

এদিকে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি (এনটিএসি) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মাস্ক পরার নির্দেশনা দেওয়াসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে।

গতকাল এনটিএসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সই করা এক বিবৃতিতে জরুরি অবস্থার জন্য পর্যাপ্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা ও চিকিৎসাকেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের স্ক্রিনিংয়ের সুপারিশও করেছে কমিটি।

পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার কারণে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের চতুর্থ ডোজ নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছে এনটিএসি।

Comments

The Daily Star  | English
Prof Yunus in Time magazine's 100 list 2025

Time’s List: Yunus among 100 most influential people

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus has been named among TIME magazine’s 100 Most Influential People of 2025.

4h ago