বিশ্ব এইডস দিবস

দেশের কোনো বিমানবন্দরেই নেই এইচআইভি শনাক্তের ব্যবস্থা

প্রতি বছর এইচআইভিতে আক্রান্ত হিসেবে যারা শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বিদেশ থেকে আসা অভিবাসী শ্রমিক। তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে এইচআইভি স্ক্রিনিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই।
এইচআইভি পরীক্ষা : দেশের কোনো বিমানবন্দরেই নেই এইচআইভি শনাক্তের ব্যবস্থা
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোয় এইচআইভি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। ছবি: ফাইল ফটো

প্রতি বছর এইচআইভিতে আক্রান্ত হিসেবে যারা শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বিদেশ থেকে আসা অভিবাসী শ্রমিক। তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে এইচআইভি স্ক্রিনিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পুরুষ যৌনকর্মী বা সমকামী এবং যারা ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় ওষুধ নেন তারা এইচআইভিতে সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অপর্যাপ্ত বাজেটের কারণে ঝুঁকিতে থাকাদের এখনো স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা যাচ্ছে না। ফলে এইচআইভি সংক্রমিত রোগীদের বড় অংশ অজান্তেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা এইচআইভি নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে আরও ত্বরান্বিত করতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের পরামর্শ দিয়েছেন।

২০২১ সালে বিমানবন্দরে আসা যাত্রীদের এইচআইভি স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনতে জনশক্তি রপ্তানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ২টি বৈঠক করেছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের (এনএএসপি) জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মো. আখতারুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। কিন্তু, এটা জরুরি। এইচআইভি পরীক্ষা সহজ। দ্রুত টেস্ট কিট ব্যবহার করে ঘটনাস্থলেই করা যেতে পারে। এর জন্য খরচ পড়বে মাত্র ১৫০ টাকা।'

প্রতি বছর এইচআইভি রোগীর সংখ্যা বাড়লেও পরীক্ষার সুবিধা এখনো ২৩ জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এর ফলে অনেক রোগীকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

আখতারুজ্জামান বলেন, 'এইচআইভি নিয়ন্ত্রণের জন্য যে বাজেট বরাদ্দ হয়েছে তা সবাইকে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।'

বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইচআইভি রোগী শনাক্ত হয়। ২০২১ সালে ৭১৯ জন নতুন করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হন। তাতে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪ হাজারে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, বর্তমানে মাত্র ৮০০ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ১ হাজার ৫৮৮ জন এইডসে মারা গেছেন।

এইচআইভির প্রাদুর্ভাব সাধারণ জনসংখ্যার মধ্যে ০ দশমিক ০১ শতাংশের কম এবং মূল জনসংখ্যার মধ্যে এটি প্রায় ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।

২০২১ সালে ৭১৯ নতুন রোগীর মধ্যে ২০ শতাংশ (১৪৪ জন) অন্য দেশ থেকে আসা যাত্রী, ২৬ শতাংশ (১৮৬ জন) সাধারণ জনগণ ও ২৬ শতাংশ (১৮৮ জন) রোহিঙ্গা।

এইচআইভি ও এইডস নিয়ে ইউনিসেফের সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার শিশু ও কিশোর-কিশোরী এইডস-সম্পর্কিত কারণে মারা গেছে।

বিশ্বে আরও ৩ লাখ ১০ হাজার নতুন সংক্রমিত হয়েছে। এর ফলে মোট এইচআইভিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ দশমিক ৭ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

11h ago