১ সপ্তাহে আটার দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা

আটা
বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পাশাপাশি আমদানি কমে যাওয়ায় দেশে আটার দাম বাড়ছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় ও আমদানি কমে যাওয়ায় দেশের বাজারে আটার দাম বাড়ছে। খুচরা বাজারে আটার দাম ১ সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি খোলা আটার জন্য দাম ছিল ৬৫-৬৬ টাকা। এর আগের রোববার ছিল দাম ছিল ৫৫-৫৮ টাকা।

২ কেজি ব্র্যান্ডের আটার প্যাকেটের দাম ১২০-১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০-১৩২ টাকা হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, ১ মাস আগে খোলা আটা প্রতি কেজির খুচরা দাম ছিল ৫২-৫৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটার দাম ছিল প্রতিকেজি ৫৮-৬০ টাকা। পরে এসব আটার দাম প্রায় ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা রিয়াজ হোসেন গতকাল মঙ্গলবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত কয়েকদিনে এ দাম বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে।'

আমাদের দেশে ধানের পরে দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত খাদ্যশস্য গম। আমদানি কমে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমাগত দাম বাড়ায় বাংলাদেশে এর দাম রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হলে বিশ্বব্যাপী গমের বাজার অস্থির হয়ে উঠে। কারণ এই ২ দেশই বিশ্বের বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ৮ মাসে গম আমদানি কমেছে।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা ভারতীয় গম প্রতি মণ (প্রায় ৩৭ কেজি) ১ হাজার ৯২০ টাকায় এবং কানাডিয়ান জাতের গম বিক্রি করছেন ২ হাজার ৪৩০ টাকায়।

এই বাজারের আহমেদিয়া ট্রেডার্সের মালিক রাজিব দাস ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। মাত্র ১ সপ্তাহে ভারতীয় ও কানাডিয়ান উভয় গমের দাম মণপ্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে।'

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ সম্প্রতি প্রতি টন রাশিয়ান গম ৪০০ ডলারে কিনেছে। এপ্রিলে এর দাম ছিল ৩০০ ডলার।

প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সহকারী মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'ডলারের বাজার অস্থির হয়ে পড়ায় এলসি খোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।'

রপ্তানি কমে যাওয়া এবং রেমিট্যান্সের বিপরীতে আমদানি বিল বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়। এতে দেশে ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

তসলিম শাহরিয়ার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, 'শিগগিরই গমের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।'

'সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি দামে আটা কিনতে হবে। ভোক্তাদের এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে,' যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালের প্রথম ৯ মাসে ৩৩ লাখ ৪ হাজার টন গম আমদানি করা হয়েছে। ২০২১ সালের একই সময়ে ১৪ লাখ ১১ হাজার টন বেশি গম আমদানি করা হয়েছিল।

কম আমদানি আটা-ময়দার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্ট সম্প্রতি জানিয়েছে, গমের উচ্চ মূল্য এবং কম সরবরাহের কারণে ভোক্তাদের চাহিদা কমে গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে আটার চাহিদা ১০ শতাংশ কমে ৬৯ লাখ টন হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Familiar Dhaka in an unfamiliar mood

The familiar city now appears in an unfamiliar form—no traffic jams, no honking, no packed footpaths

3h ago