প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক

বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রতীকী ছবি

চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি। অপ্রয়োজনে এই ওষুধ সেবনে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা।

শুধুমাত্র ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাপী সাত লাখ মৃত্যুর কারণের মধ্যে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, ২০৫০ সাল নাগাদ অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে প্রতি বছর এক কোটি মানুষ মারা যেতে পারে।

এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে প্রায় ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে এটি। অর্থনৈতিকভাবে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২১০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২০৫০ সালে এই দুই অঞ্চলের জিডিপির সাত শতাংশ। এ ছাড়া, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা কাটিয়ে উঠতে চিকিৎসার প্রয়োজনে আনুমানিক দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে।

এ সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করেছেন একদল গবেষক। সম্প্রতি আইসিডিডিআর,বি (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ), স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১২টি দৈনিকের ২৭৫টি প্রতিবেদন, সম্পাদকীয় ও মতামত বিশ্লেষণ করেন।

আজ বুধবার আইসিডিডিআর,বি এই তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা সম্পর্কিত ৩২ দশমিক দুই শতাংশ প্রতিবেদন করা হয়েছে ভোক্তাদের দ্বারা অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বিষয়ে। এ ছাড়া, ২৯ শতাংশ সংবাদ ছিল চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি নিয়ে এবং ২৬ দশমিক এক শতাংশ প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের অতিরিক্ত ওষুধ দেওয়ার ঘটনা দেখা যায়।

তবে, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রসার এবং বিক্রিতে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর ভূমিকা নিয়ে খুব বেশি প্রতিবেদন দেখা যায়নি।

আইসিডিডিআর,বির হেলথ সিস্টেমস অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ বিভাগের রিসার্চ ইনভেস্টিগেটর এবং এই গবেষণার প্রধান গবেষক ডা. তাহমিদুল হক বলেন, 'মানুষের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা বিষয়ে সচেতনতা তৈরি এবং জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা সমর্থন করতে গণমাধ্যমে সঠিক, বিস্তারিত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সংবাদ প্রয়োজন। এর ফলে মানুষ যেমন সচেতন হবে, পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদেরও জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা যাবে।'

বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, মূত্রনালীর সংক্রমণ, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন এবং সেপসিসসহ বিভিন্ন সংক্রমণের জন্য দায়ী ই. কোলাই-এর মতো সাধারণ অণুজীবের মধ্যে প্রতিরোধ্যতার হার উদ্বেগজনকভাবে বেশি দেখা গেছে। অ্যামপিসিলিনের রেজিস্ট্যান্স ৯৪ দশমিক ছয় শতাংশ, অ্যামোক্সিক্লাভ ৬৭ দশমিক এক শতাংশ, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ৬৫ দশমিক দুই শতাংশ এবং কো-ট্রাইমক্সাজোল ৭২ শতাংশ।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh's rice output crosses 4cr tonnes for the first time

For the first time, Bangladesh has bagged more than 4 crore tonnes of rice in a fiscal year (FY) thanks to increasing yields of the most grown crop, according to official data..Local farmers have been gradually switching to high-yielding and hybrid varieties of the cereal grain, bringing t

1h ago