সন্তানের হাতে স্মার্টফোন দেওয়ার আগে আবারও ভাবুন

একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি প্রায়ই ৩ থেকে ৫ বছর বয়সী এমন শিশুদের পাই, যারা পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলে না, কোনো কিছুতে মনোযোগ নেই, সামাজিক সম্পর্ক নেই, ঠিক মতো ঘুমায় না, মেজাজ খিটখিটে, বাইরে খেলতে যেতে চায় না, পড়াশুনা করতে চায় না, স্কুলে যেতে চায় না। অভিভাবকরা এমন সমস্যার কথা জানান।
শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়া হতে পারে ক্ষতির কারণ। ছবি: এএফপি

একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি প্রায়ই ৩ থেকে ৫ বছর বয়সী এমন শিশুদের পাই, যারা পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলে না, কোনো কিছুতে মনোযোগ নেই, সামাজিক সম্পর্ক নেই, ঠিক মতো ঘুমায় না, মেজাজ খিটখিটে, বাইরে খেলতে যেতে চায় না, পড়াশুনা করতে চায় না, স্কুলে যেতে চায় না। অভিভাবকরা এমন সমস্যার কথা জানান।

তারা বলেন, গর্ভাবস্থা, প্রসবকালীন বা প্রসব পরবর্তী সময়েও কোনো ধরনের জটিলতা হয়নি, কিন্তু তারপরও তাদের সন্তানের মাঝে এসব সমস্যা দেখতে পাচ্ছেন।

আমরা সবাই প্রযুক্তির পিছনে ছুটছি। প্রযুক্তির স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না জেনেই এর পেছনে ছুটছি। এটা প্রায় প্রতিটি পরিবারে ক্ষেত্রেই সত্য। নিঃসন্দেহে স্মার্টফোন একটি স্মার্ট ডিভাইস, যা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে বেশ সহজ করেছে। তবে এর অত্যধিক ব্যবহার আমাদের সন্তানদের অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে।

স্মার্টফোন, টিভি, ট্যাব, কম্পিউটার এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে, অভ্যস্ততায় পরিণত হয়েছে। এসব ব্যবহার না করে একটি দিন পার করার কথাও আমরা ভাবতে পারি না।

শিশুরা তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি শেখে। তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে যে বাবা-মা কী করছেন। বাবা-মায়ের মতোই সবকিছু করার চেষ্টা করে শিশুরা। তারা ভাবে, এটাই তাদেরও করণীয়।

সারাদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্মার্টফোনে সময় না কাটিয়ে বরং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কেবল প্রয়োজনের সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করা উচিত। স্মার্টফোনে বেশি সময় দিলে এর প্রতি নেশাগ্রস্ত হয়ে পরতে পারেন। আমাদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও সেটা হতে পারে। দেরীতে কথা শেখা, মনোযোগের অভাব, কথা কম বলা, ঘুম কমে যাওয়া, স্কুলে খারাপ ফলাফল, ক্ষুধামন্দার মতো সমস্যাগুলোর সঙ্গে স্মার্টফোন, টিভি, কম্পিউটার, ট্যাব ব্যবহারের কিছু যোগসূত্র আছে।

কাজেই শিশুদের সামনে বেশি সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার না করা এবং ১৫ বছর বা তার বেশি বয়স না হওয়া পর্যন্ত তাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে না দেওয়া ভালো। শিশুদের ব্যস্ত ও শান্ত রাখার জন্য তাদের সামনে স্মার্টফোন দেওয়া খুবই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তারা শিগগির এতে আসক্ত হয়ে পড়বে এবং তাদের চোখ সব সময় স্মার্টফোনের পর্দায় আটকে থাকবে। ধীরে ধীরে তৈরি হবে কথা বলায় সমস্যা, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দা, একাগ্রতার অভাবসহ নানা সমস্যা।

কাজেই অভিভাবকদের উচিত শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে না দেওয়া এবং তাদের সামনে বেশি সময় স্মার্টফোন ব্যবহার না করা।

অধ্যাপক এম করিম খান, পেডিয়াট্রিক্স বিভাগ, কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Don’t stop till the dream comes true

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday urged key organisers of the student-led mass uprising to continue their efforts to make students’ and the people’s dream of a new Bangladesh come true.

1h ago