ঘরে বসেই করা যাবে ডেঙ্গু পরীক্ষা

সংস্থাটি বলেছে, কোনো সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে অর্ডার পেলেই তারা কিট উৎপাদন শুরু করতে পারে।

ঘরে বসেই ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য দেশেই তৈরি হচ্ছে ডেঙ্গু টেস্ট কিট। বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস্-বিআরআইসিএম ডেঙ্গু র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটটি তৈরি করেছে, যা ডেঙ্গুর সব ধরনের সেরোটাইপ শনাক্ত করতে সক্ষম।

সংস্থাটি বলেছে, কোনো সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে অর্ডার পেলেই তারা কিট উৎপাদন শুরু করতে পারে।

গত জানুয়ারিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) কিটটির বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমোদন দেয়। 

ডিজিডিএর উপ-পরিচালক মো. আব্দুল মালেক গতকাল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সবকিছু যাচাই-বাছাই করার পর, আমরা বিআরআইসিএমকে ড্রাগ লাইসেন্স দিয়েছি এবং এই বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে কিট উৎপাদন শুরু করার অনুমোদন দিয়েছি।'

বাংলাদেশ সরকারকে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক টেস্ট কিট আমদানি করতে হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন, যদি সরকারি হাসপাতালগুলো স্থানীয় পরীক্ষার কিট ব্যবহার করে তবে এটি ফরেক্সের ওপর চাপ কমিয়ে দেবে।

বিআরআইসিএম-এর মহাপরিচালক মালা খান বলেন, '২০২১ সাল থেকে যখন দেশে ডেঙ্গু বাড়তে শুরু করে তখন থেকে আমরা কিট তৈরির কাজ করি। প্রোটোকলটি তৈরির পর ২০২২ সালের মার্চ মাসে এটি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) এর কাছে জমা দেই। পরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট মধ্যে কিটটির ক্লিনিকাল ট্রায়াল হয়। আমরা যে কিট তৈরি করেছি সব করসহ এর দাম হবে ১২০ টাকা, যা আমদানি করা কিটের চেয়ে সস্তা।'

মালা খানের নেতৃত্বে মামুদুল হাসান রাজু, রাইসুল ইসলাম রাব্বি, জাবেদ বিন আহমেদ, খন্দকার শরীফ ইমাম, মো রাহাত, নাফিসা চৌধুরী এবং মো. সোহেলসহ একদল বিজ্ঞানী কিটটি তৈরি করেন। মালা বলেন, 'জিকা, চিকুনগুনিয়া এবং কোভিড-১৯ এর মতো অন্যান্য ধরনের ভাইরাসের সাথে কিটটির কোনো ক্রস-রিয়েকশন নেই।

প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরীক্ষার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকের সাহায্যে হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু ডেঙ্গু র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন কিটের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ জনবলের সাহায্য ছাড়াই ল্যানসেট ব্যবহার করে ঘরে বসেই আঙুলের ডগায় রক্ত পরীক্ষা করা সম্ভব।' 

'কিটটির সংবেদনশীলতা শতভাগ সঠিক বলে প্রমাণিত, এটি আজ পর্যন্ত কোনো ভুল রিপোর্ট দেয়নি। আমাদের কাছে সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে এবং আমরা প্রতিদিন ৫০ হাজার কিট তৈরি করতে প্রস্তুত,' বলেন তিনি। 

বিআরআইসিএম কর্মকর্তারা জানান, গত ২১ জানুয়ারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এই পরীক্ষার কিটগুলো কেনার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও কোনো অর্ডার পাওয়া যায়নি।'

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, 'এটি খুবই ভালো খবর। যেকোনো পণ্য কেনার জন্য আমাদের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। আমরা আমাদের স্থানীয় পণ্যের প্রচার করতে চাই। সবগুলো মানদণ্ড পূরণ হলে আমরা অবশ্যই কিটটি কিনব।'

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago