লন্ডন পুলিশ বর্ণবাদী ও নারীবিদ্বেষী: প্রতিবেদন

লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

যুক্তরাজ্যের লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বর্ণবাদী, নারীবিদ্বেষী ও সমকামিতাবিরোধী (হোমোফোবিক)। এছাড়াও সংস্থাটি নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ব্যর্থ হয়েছে।

লন্ডন পুলিশ নিয়ে এক নিরপেক্ষ পর্যালোচনায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের তৎকালীন প্রধান ক্রেসিডা ডিক এই পর্যালোচনার আয়োজন করেন। এক কর্তব্যরত পুলিশের হাতে তরুণী সারাহ এভেরার্ডের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় সংস্থাটির সার্বিক পর্যালোচনা (রিভিউ) সমীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ দেন তিনি।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্য লুইস কেসি এ পর্যালোচনার নেতৃত্ব দেন।

তিনি জানান, লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের বেশকিছু বিষয়ে আশংকাজনক ব্যর্থতার নজির পাওয়া গেছে। এ সংস্থার 'বৈপ্লবিক' সংস্কার প্রয়োজন।

'মেট' নামে পরিচিত এ সংস্থায় ৪৩ হাজারেরও বেশি কর্মী আছেন।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, 'আমরা মেট বাহিনীতে ব্যাপক হারে বুলিং, বৈষম্য, প্রাতিষ্ঠানিক সমকামিতাবিরোধী চিন্তাধারা, নারীবিদ্বেষ ও বর্ণবাদের নজির পেয়েছি এবং নারী ও শিশুদের সুরক্ষা ও সহায়তা পাওয়ার অধিকার থাকলেও, তারা তা পাচ্ছে না (পুলিশের কাছ থেকে)।'

পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, বাহিনীর নারী সদস্যরা অশুভ পরিণাম ও তাদের ক্যারিয়ারের ক্ষতি হওয়ার ভয়ে মন খুলে কথা বলতে পারেন না। অনেক সময় তাদের উদ্দেশ্যে 'হালকা আলাপচারিতার' তকমা দিয়ে বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলা হয়।

প্রতিবেদনে পুলিশ কর্মকর্তাদের এসব আচরণের আরও কিছু উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।

যেমন, ১ শিখ কর্মকর্তাকে ধর্মীয় কারণে রাখা দাঁড়ি কেটে ফেলতে বাধ্য করা হয়। কারণ তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে এ ধরনের অনুশাসনকে 'হাস্যকর' বলে মনে হয়েছিল।

এছাড়াও, ১ মুসলিম কর্মকর্তার বুট জুতার ভেতর 'কৌতুক' হিসেবে শুকরের মাংস রেখে দেওয়া হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের সংস্কারে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে তাদের নিজেদের অন্যায় ও ভুলের মাত্রা স্বীকার ও অনুধাবন না করতে পারা।

এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর 'মেট' বাহিনীর কমিশনার ও যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা মার্ক রাউলি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা লন্ডনবাসীদের ও যারা ফ্রন্টলাইনে আছেন, তাদেরকে দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছি। আমি খুবই দুঃখিত।'

'এ প্রতিবেদনে অনেক ধরনের আবেগের সৃষ্টি হয়েছে। রাগ, হতাশা, লজ্জা—সবচেয়ে বেশি অনুভূতি হচ্ছে। এসবের সমাধান প্রয়োজন,' যোগ করেন রাউলি।

প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাক বলেন, 'পুলিশের ওপর মানুষের ভরসা "ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত" হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান লন্ডন পুলিশে তীব্র সমালোচনা করে পার্লামেন্টে বলেন, 'এ সংস্থার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো থেকে উত্তরণে অনেক বছর লেগে যেতে পারে।'

৩৬০ পাতার প্রতিবেদনে সুপারিশ হিসেবে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, নারীদের সুরক্ষা দেওয়ার বিশেষায়িত সেবা ও শিশুদের জন্য নতুন কৌশল তৈরির কথাও বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Students to resist AL event today

The student movement against discrimination will hold a mass gathering at Zero Point in the capital’s Gulistan today, demanding trial of the Awami League.

3h ago