ভারতে ২ হাজার রুপির নোট বৈধ থাকবে ৩০ সেপ্টেম্বরের পরেও
ভারতের সর্বোচ্চ মূল্যমানের ২ হাজার রুপির নোট সম্প্রতি বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগামীকাল থেকে ব্যাংকগুলোতে ২ হাজার রুপির নোটের বদলে অন্যান্য মানের নোট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।
আজ সোমবার ভারতের সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ২ হাজার রুপির নোট বদলে নিতে তাড়াহুড়া করার বা ভীত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
৩০ সেপ্টেম্বরের পরেও নোটগুলো বৈধ থাকবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, 'এখনি ব্যাংকে ভিড় জমানোর কোনো কারণ নেই। আপনাদের হাতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪ মাস সময় রয়েছে।'
শক্তিকান্ত দাস আরও জানান, বড় সময়সীমা দেওয়ার কারণ হলো যেন মানুষ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় এবং ২ হাজার রুপির নোটগুলো ফেরত দেয়।
যেসব মানুষ দেশের বাইরে থাকার কারণে নোট বদলাতে পারছেন না, তাদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিকল্প ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।
তিনি নিশ্চিত করেন, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সব ব্যাংককে ২ হাজার রুপির নোট বদলে অন্য নোট দেওয়ার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
'আমাদের কাছে প্রয়োজনের চেয়েও বাড়তি ছাপানো নোট রয়েছে', যোগ করেন তিনি।
১ হাজার রুপির নোট আবারও বাজারে ছাড়া হতে পারে, এ প্রসঙ্গে শক্তিকান্ত দাস বলেন, 'এটা গুজব। এ মুহূর্তে এ ধরনের কোনো প্রস্তাব নেই।'
২০১৬ সালে কালো টাকার লেনদেন বন্ধ করতে মোদি সরকার ১ হাজার রুপির নোট বাতিল করে।
সরকার শুক্রবার ঘোষণা দেয়, ২ হাজার রুপির নোট প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। তবে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই নোট বদলে নেওয়া বা অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া যাবে।
পরবর্তীতে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া জানায়, কোনো ধরনের রিকুইজিশন স্লিপ ছাড়াই নোট বদলে নেওয়া যাবে। এমন কী কোনো পরিচয়পত্রও দেখাতে হবে না। এছাড়াও, একবারে সর্বোচ্চ ১০টি ২০ হাজার রুপির নোট (২০ হাজার রুপি) বদলে নেওয়া যাবে। যতবার ইচ্ছে নোট বদলানো যাবে, তবে একবারে ২০ হাজারের বেশি বদলানো যাবে না।
যেহেতু নোট বদলাতে বা ফেরত দিতে কোনো ধরনের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে না, সে ক্ষেত্রে সরকার কীভাবে কালোটাকার প্রবাহ নিরীক্ষা করবে, এ প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, 'আমরা ব্যাংককে তাদের প্রচলিত প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে বলেছি। তাদেরকে ভিন্ন কিছু করতে বলা হয়নি।'
বড় অংকের লেনদেনের ওপর নজর রাখা হবে কী না, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'রিজার্ভ ব্যাংক কখনো ব্যাংকে জমা দেওয়া টাকা নিরীক্ষা করেনা। এটা আয়কর বিভাগের কাজ। ব্যাংকের রিপোর্টিং প্রক্রিয়া আছে। সে অনুযায়ী কাজ হবে।'
বর্তমানে ভারতের বাজারে ৩ দশমিক ৬২ ট্রিলিয়ন রুপি বা ৪৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ২ হাজার রুপির নোট আছে, যা মোট মুদ্রাবাজারের ১০ দশমিক ৮ শতাংশ।
শক্তিকান্ত দাস বলেন, '২ হাজার রুপির নোট প্রত্যাহারে অর্থনীতির ওপর খুবই সামান্য প্রভাব পড়বে। ২ হাজার রুপির নোটের ব্যবহার সীমিত ছিল। এ কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে না।'
Comments