পাকিস্তানে গির্জা ও ঘরবাড়িতে আগুন, গ্রেপ্তার ৭০০

পাঞ্জাবের জারানওয়ালায় একটি গির্জায় আগুন। ছবি: রয়টার্স

কোরআনের অবমাননার কথিত অভিযোগে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে একটি খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকায় একাধিক চার্চ ও ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় প্রায় ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পাঞ্জাবের ফায়সলাবাদ জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ওই এলাকায় ৫টি চার্চ এবং বহু বাড়িতে আগুন দেয় উন্মত্ত জনতা। সেখানে একটি খ্রিষ্টান কবরস্থানেও ভাঙচুর চালানো হয়। হামলাকারীদের ভাষ্য, ফায়সলাবাদের জারানওয়ালা টাউনে বসবাসকারী একটি খ্রিষ্টান পরিবার কোরানের অবমাননা করেছে।

বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থী ইসলামী সংগঠন এই আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছে। জানমাল রক্ষায় খ্রিষ্টানদের এলাকাগুলো কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন জানায়, বুধবার গভীর রাতে পৃথক বিবৃতিতে দিয়েছে পাঞ্জাব পুলিশ ও জরানওয়ালা পুলিশ। বিবৃতিতে জানানো হয়, সন্ত্রাসবিরোধী দুই মামলায় পাঞ্জাব পুলিশ শতাধিক ও জরানওয়ালা পুলিশ ৬০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন আক্রান্ত হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের সদস্যদের মোতায়েন করে পাঞ্জাব সরকার। সেই সঙ্গে এলিট ফোর্সসহ বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ডন জানায়, জরানওয়ালার সিনেমা চক এলাকায় পবিত্র কোরআনের কয়েকটি ছেড়া পৃষ্ঠা পাওয়া যাওয়ার পর সহিংসতা শুরু হয়। কোরআনের পৃষ্ঠাগুলো যেখানে পাওয়া যায় সেখানেই খ্রিষ্টান দুই ভাই বসবাস করতেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, জেলা প্রশাসন সাত দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সেই সঙ্গে সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া সব ধরনের সমাবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘটনার তদন্তের জন্য একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে পাঞ্জাব সরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

গির্জা ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে এসব ঘটনা তদন্তে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, 'পাকিস্তানে কোরআন অবমাননার খবরে গির্জা ও বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।'

বেদান্ত প্যাটেল আরও বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র মুক্তমতকে সমর্থন করে। সহিংসতা কিংবা সহিংসতার হুমকি কখনো মত প্রকাশের গ্রহণযোগ্য ধরন হতে পারে না। এসব অভিযোগের বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত পরিচালনা এবং পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আমরা পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।'

পাকিস্তানে ইসলাম অবমাননার বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। দেশটিতে ইসলাম ধর্ম কিংবা ইসলাম ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অবমাননার দায়ে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড দেওয়ারও বিধান আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Sada Pathor Looting: Admin officials, law enforcers involved

Some government officials  including members of law enforcement agencies were involved in the rampant looting of stones from Bholaganj’s Sada Pathor area, found a probe committee of the Sylhet district administration.

3h ago