‘লোহার ফুসফুসের’ সাহায্যে বেঁচে থাকা সেই ‘পোলিও পল’ মারা গেছেন
সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে 'লোহার ফুসফুসের' ভেতর বেঁচে থাকা 'পোলিও পল' নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবী ও লেখক পল আলেকজান্ডার মারা গেছেন।
তার ভাই ফিলিপ আলেকজান্ডারের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সিএনএন জানায়, মৃত্যুকালে পল আলেকজান্ডারের বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
পল আলেকজান্ডারের চিকিৎসা সহায়তার জন্য প্রতিষ্ঠিত 'গোফান্ডমি' পেজে মঙ্গলবার তার মারা যাওয়ার তথ্য জানানো হয়।
সেখানে তার ভাই ফিলিপ আলেকজান্ডার জানান, পল আলেকজান্ডারের মৃত্যুর সঠিক কারণ স্পষ্ট নয়। করোনা সংক্রমণ নিয়ে তিন সপ্তাহ আগে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তবে এ সপ্তাহের পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ আসে।
১৯৫২ সালে মাত্র ছয় বছর বয়সে পোলিওতে আক্রান্ত হন পল আলেকজান্ডার। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পোলিও প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, তখন দেশটিতে ২১ হাজারেরও বেশি মানুষ পোলিওতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
১৯৫৫ সালে পোলিওর টিকা আসে। ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে পোলিওমুক্ত ঘোষণা করা হয়।
পোলিওর কারণে পল আলেকজান্ডারের ঘাড় থেকে শরীরের নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়। যার ফলে তিনি নিজ থেকে শ্বাস নিতে পারতেন না।
শ্বাস নিতে সহায়তার জন্য পলকে ৬০০ পাউন্ড ওজনের ক্যাপসুল আকৃতির একটি যন্ত্রের (আয়রন লাং) ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ক্যাপসুলটি তার মাথা ছাড়া পুরো শরীর ঢেকে রাখে। যন্ত্রটি কৃত্রিম ফুসফুস হিসেবে কাজ করে।
পরবর্তী সময়ে উন্নত প্রযুক্তি এলেও পল আলেকজান্ডার এই লোহার ফুসফুস ছাড়তে নারাজ ছিলেন। তার ভাষ্য ছিল, তিনি এই যন্ত্রের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ পল আলেকজান্ডারকে বিশ্বের দীর্ঘতম 'আয়রন ফুসফুসের রোগী' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
Comments