আমিরাতে ‘ভিসা অ্যামনেস্টি’ চালু, বৈধতা পাবেন অবৈধ বসবাসকারীরা

আমিরাতে রেসিডেন্স বা ভিজিট ভিসায় এসে সে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও যারা অবৈধভাবে দেশটিতে বসবাস করছেন, তাদেরকে ‘সাধারণ ক্ষমার’ আওতায় ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে দেশটির সরকার।  
দুবাইর শেখ জায়েদ সড়কের চিত্র। প্রতীকী ফাইল ছবি: রয়টার্স
দুবাইর শেখ জায়েদ সড়কের চিত্র। প্রতীকী ফাইল ছবি: রয়টার্স

কোনো ধরনের জরিমানা, ফিস বা নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই আগামী দুই মাস সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবৈধভাবে বসবাসকারীরা বৈধ ভিসার আবেদন করতে পারবেন। কেউ দেশ ছেড়ে যেতে চাইলেও বিনা বাধায় তা করতে পারবেন।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ ও খালিজ টাইমস।

আমিরাতে রেসিডেন্স বা ভিজিট ভিসায় এসে সে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও যারা অবৈধভাবে দেশটিতে বসবাস করছেন, তাদেরকে 'সাধারণ ক্ষমার' আওতায় ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে দেশটির সরকার।  

দুবাইর বিখ্যাত বুর্জ খলিফা হোটেল। প্রতীকী ফাইল ছবি: রয়টার্স
দুবাইর বিখ্যাত বুর্জ খলিফা হোটেল। প্রতীকী ফাইল ছবি: রয়টার্স

২৮ আগস্ট বুধবার আবুধাবিতে নাগরিকত্ব, জাতীয়তা, শুল্ক ও বন্দর নিরাপত্তার কেন্দ্রীয় কতৃপক্ষ (আইসিপি) এই সাধারণ ক্ষমা উদ্যোগের বিস্তারিত জানায়।

আজ রোববার ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সকাল থেকেই হাজারো অবৈধ বসবাসকারী এই সুবিধা নেওয়ার জন্য সরকার নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে ভীড় করছেন।

পাকিস্তান ও ভারতের দূতাবাস এ বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনাও দিয়েছে তাদের নাগরিকদের।

দুই মাসের এই উদ্যোগের আওতায় আইন লঙ্ঘণকারীরা বৈধ ভিসা নিতে পারবেন অথবা কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা, জরিমানা বা এক্সিট ফিস না দিয়েই আমিরাত ছেড়ে চলে যেতে পারবেন।

এর আগে দুবাইভিত্তিক অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংক্রান্ত পরিদপ্তর (জিডিআরএফএ) জানায়, তারা সাধারণ ক্ষমা উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজ থেকে ভিসার আবেদনপত্র গ্রহণ শুরু করবে।

বৃহস্পতিবার সংস্থাটি জানায়, আবেদনকারীরা দুবাইর বিভিন্ন অংশে স্থাপিত ৮৬টি আমের সেন্টারে আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন। এই কেন্দ্রগুলো আমের২৪৭ নামের একটি আধা-সরকারি সংস্থা পরিচালনা করে।

পাশাপাশি, আল আউইর শহরে অবস্থিত জিডিআরএফএ সেন্টারেও এই সেবা নেওয়া যাবে।

একটি আমের সেন্টারের ভেতরের চিত্র। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
একটি আমের সেন্টারের ভেতরের চিত্র। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

যারা আমিরাতে থেকে যেতে চান, তাদের সব ধরনের সেবা দেবে আমের সেন্টার। পাশাপাশি, যাদের বায়োমেট্রিক ফিংগারপ্রিন্ট সহ আমিরাতি আইডি কার্ড আছে, তাদেরকেও সেবা দেওয়া হবে এসব কেন্দ্রে।

অপরদিকে, যারা দেশ ছেড়ে যেতে চান, তাদেরকে বহির্গমনের আনুষ্ঠানিক অনুমতি, ফিংগারপ্রিন্ট সেবা ও অন্যান্য সেবা দেবে আল আউইর শহরে অবস্থিত জিডিআরএফএ সেন্টার।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবৈধভাবে বসবাসকারীরা কোনো ধরনের প্রশাসনিক বিধিনিষেধ ছাড়াই দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন। অর্থাৎ তাদের পাসপর্টে কোনো 'ব্যান স্ট্যাম্প' দেওয়া হবে না এবং ভবিষ্যতে তারা কোনো সমস্যা ছাড়াই বৈধ ভিসা নিয়ে আবারও আমিরাতে ফিরতে পারবেন।

জিডিআরএফএ'র মহাপরিচলাওক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মেদ আহমেদ আল মাররি জানান, এই সাধারণ ক্ষমা প্রকল্পে 'আরব আমিরাতের অবলম্বন করা মানবিক মূল্যবোধ ও সহনশীলতা, এই দেশে বসবাসরত সকল সম্প্রদায়ের প্রতি সহানুভূতি, সম্মান ও আইনের শাসনের প্রতিফলন ঘটেছে।'

তিনি এই প্রকল্পে বিষয়ে শুধু আনুষ্ঠানিক সূত্র থেকে তথ্য জানার ওপর জোর দেন। তিনি উল্লেখ করেন, জিডিআরএফএর কলসেন্টাররের নম্বর ৮০০৫১১১ যা দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে সাত দিনই চালু থাকে।

এর আগে আইসিপি জানায়, এই অ্যামনেস্ট প্রোগ্রামে পর্যটক, মেয়াদোত্তীর্ণ আবাসন ভিসাসহ সব ধরনের ভিসা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

যারা এ দেশে জন্ম নিয়েছেন কিন্তু বৈধ কোনো নথি পাননি, তারাও এই প্রকল্পের আওতায় বৈধতা নিতে পারবেন। যারা পৃষ্ঠপোষকের মাধ্যমে আমিরাতে এসে পালিয়ে গেছেন, তারাও এই সুবিধা নিতে পারবেন। তবে যারা অবৈধভাবে আমিরাতে প্রবেশ করেছেন, তারা ক্ষমা পাবেন না।

 

Comments