কপ-২৯ সম্মেলন: বড় দেশগুলোর সাহায্যের পরিমাণ ‘অপমানজনক’

দরিদ্র দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোকে আরও বেশি অর্থ দিতে আজারবাইজানের বাকুতে পরিবেশবাদীদের বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি

কপ-২৯ সম্মেলনে জলবায়ু সংকট নিরসনে বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিতে সম্মত হয়েছে বড় অর্থনীতির দেশগুলো। এই সাহায্যের পরিমাণকে 'অপমানসূচক' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন সমালোচকরা। কপ-২৯'কে একটি ব্যর্থ সম্মেলন বলে দাবি করেছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ।

আজ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন কপ-২৯'র শেষদিন ছিল গতকাল শুক্রবার। শেষদিনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বড় অর্থনীতির দেশগুলো জলবায়ু সংকট নিরসনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ২৫০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব রাখে।

সম্মেলনে থাকা ছোট অর্থনীতির দেশগুলো সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেন। জলবায়ু সংকট নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো এই অঙ্ককে 'তামাশা', 'লজ্জাজনক', 'আপত্তিকর' বলে মন্তব্য করে।

পানামার প্রতিনিধি হুয়ান কার্লোস মন্টেরি গোমেজ গার্ডিয়ানকে বলেন, 'এটা কোনোভাবেই যথেষ্ট না। আমাদের বছরে অন্তত পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমরা চেয়েছি এক দশমিক তিন ট্রিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক জিডিপির মাত্র এক শতাংশ।'

উন্নয়নশীল ও স্বল্প উন্নত দেশগুলোর সমালোচনার মুখে সাহায্যের পরিমাণ নিয়ে আজ শনিবারও আলোচনায় বসা হয়। সেখানে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য দিতে সম্মত হয় বড় অর্থনীতির দেশগুলো।

গার্ডিয়ান জানায়, রুদ্ধদ্বার আলোচনার ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ ৩০০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবে সম্মত হয়। তবে জাপান, সুইজারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড এর বিরোধিতা করে।

৩০০ বিলিয়নের এই প্রস্তাবেও সম্মতি দেয়নি উন্নয়নশীল দেশগুলো। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, আলোচনা এখনো চলছে। ছোট দ্বীপপুঞ্জ রাষ্ট্রগুলো ও স্বল্প উন্নত দেশগুলোকে নিয়ে গড়া দুটি সংগঠন আলোচনা বর্জন করেছে।

এবারের কপ সম্মেলনকে ব্যর্থ ঘোষণা করে প্রখ্যাত পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, '(সাহায্যের) যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা ভয়াবহ। যদিও এ নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা নেই বললেই চলে, কিন্তু এরপরও এরকম ধারাবাহিক বিশ্বাসঘাতকতার জবাবে ক্ষোভ ছাড়া কিছু প্রদর্শন করতে পারব না।'

'ক্ষমতাসীনরা আবারও জলবায়ু সংকটের প্রভাবিত হতে যাওয়া অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিতে সম্মত হচ্ছে। তারা সব ভুয়া সমাধান ও ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৈশ্বিক উত্তরের দেশগুলোর যে জলবায়ু ঋণ, তা পরিশোধের কোনো চেষ্টাই করছে না তারা,' যোগ করেন গ্রেটা।

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

10h ago