গাজায় ত্রাণ বন্ধ করল ইসরায়েল

গাজায় সব ধরনের মানবিক ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার। গাজায় ইসরায়েল-হামাসের প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষে এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি।
আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ৪২ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হয়। পূর্ব আলোচনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপ শেষে দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন হবার কথা ছিল। দ্বিতীয় ধাপের মূল সুর ছিল বাকি জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন।
গত ছয় সপ্তাহজুড়ে দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা, দরকষাকষি ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে এসেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। কিন্তু ইসরায়েলের অসহযোগিতামূলক আচরণে তা আলোর মুখ দেখেনি।
এক পর্যায়ে ইসরায়েল জানায়, মেয়াদ শেষে আবারও হামাসের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করবে তারা।
এই পরিস্থিতি এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব দেয়, রমজান মাসে যুদ্ধও বন্ধ থাকা উচিত। দ্বিতীয় ধাপের পরিবর্তে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর মডেল নিয়ে আসেন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। এই প্রস্তাব মতে, এপ্রিলের মধ্যভাগ পর্যন্ত সাত দিন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হবে এবং এই সময়ের মধ্যে বাকি সব ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তি পাবেন।
তবে হামাস এই প্রস্তাব নাকচ করে দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের দাবি জানায়।
যার ফলে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আজ জানিয়েছে, 'জিম্মি সংক্রান্ত চুক্তির প্রথম ধাপ শেষ হয়েছে। ইসরায়েল মেনে নিলেও, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অব্যাহত রাখার জন্য উইটকফের দেওয়া অবকাঠামো মেনে নিতে অস্বীকার করেছে হামাস। এই পরিস্থিতির আলোকে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আজ সকালে গাজা উপত্যকায় সবধরনের পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।'
'আমাদের সব জিম্মিরা মুক্তি পাবে না, এমন কোন যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয় ইসরায়েল। যদি হামাস অস্বীকৃতি জানানো অব্যাহত রাখে, তাহলে ওই সিদ্ধান্তের পরিণাম ভোগ করতে হবে তাদের'।
এর আগে, আজ সকালেই হামাস নেতা মাহমুদ মারদাউই এক বিবৃতিতে জানান, 'এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ও বন্দিদের ফিরিয়ে আনতে একমাত্র পথ হল চুক্তির বাস্তবায়ন—(যুদ্ধবিরতি চুক্তির) দ্বিতীয় ধাপের বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা (এই প্রক্রিয়া) শুরু হতে পারে।'
দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার ও এই ভূখণ্ডের পুনর্নির্মাণের বিষয়গুলো রাখতে চায়।
মারদাউই জানান, 'দ্বিতীয় ধাপের চুক্তির অংশ হিসেবে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে'।
'আমরা এটাই চাই এবং আমরা এই দাবি থেকে সরে আসব না', বলেন তিনি।
অপরদিকে ইসরায়েল চায় প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়িয়ে সেটাকেই অব্যাহত রাখা হোক।
ধারণা করা হয়, এখনো ২৪ জন জিম্মি জীবিত অবস্থায় গাজায় আছেন।
Comments