৩ বছর পর তুরস্কে কিয়েভ-মস্কো শান্তি আলোচনা, থাকছেন না পুতিন-ট্রাম্প

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। ছবি: এএফপি

প্রায় তিন বছর পর প্রথমবারের মতো আজ সরাসরি শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা।

আজ বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও থাকলেও এতে অংশ নেবেন না দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপরদিকে, রাশিয়া এই আলোচনার প্রস্তাব রাখলেও এতে যোগ না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রোববার পুতিন ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ও দরকষাকষির প্রস্তাব রাখেন। তিনি প্রস্তাব রাখেন, 'কোনো ধরনের পূর্বশর্ত' ছাড়াই ১৫ মে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এই বৈঠকের আয়োজন হওয়া উচিত।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, তাদের প্রতিনিধিদলে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেদিনস্কি ও উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্ডার ফোমিন থাকছেন। তবে তালিকায় পুতিনের নাম নেই।

রুশ তালিকা প্রকাশের পর এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশে সফররত ট্রাম্প ওই বৈঠকে যোগ দেবেন না। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, বৈঠকে যোগ দেওয়ার বিষয়টি তার বিবেচনায় আছে।

কমেছে বৈঠকের গুরুত্ব

বিশ্লেষকদের মত, পুতিন-ট্রাম্পের অনুপস্থিতি এই বৈঠকের গুরুত্ব অনেকাংশেই কমিয়ে দিয়েছে। তারা মনে করছেন না এই বৈঠক থেকে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের ক্ষেত্রে কোনো যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত আসবে।

এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। তিনি বলেন, 'ভয় না পেয়ে থাকলে' পুতিন যেন এতে অংশ নেন। বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার চেয়ে ইউক্রেন শান্তি প্রতিষ্ঠায় বেশি অঙ্গীকারবদ্ধ—এ বিষয়টি ট্রাম্পের কাছে প্রমাণ করার জন্যেও জেলেনস্কি এ কথা বলেছেন।

বুধবার গভীর রাতে তুরস্কের পথে রওনা হন জেলেনস্কি।

জেলেনস্কির যোগদানও অনিশ্চিত

তবে এক ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানান, তুরস্কে পৌঁছালেও জেলেনস্কির বৈঠকে যোগ দেওয়া নিশ্চিত নয়। শুধু পুতিন যোগ দিলেই তিনি ওই বৈঠকে যোগ দেবেন।

বুধবার সান্ধ্যকালীন ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, পুতিনের অংশগ্রহণের বিষয়টি স্পষ্ট হলে ইউক্রেন তুরস্কের শান্তি আলোচনার ধাপগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

জেলেনস্কি বলেন, 'এই যুদ্ধ নিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর মস্কোর কাছে। কী ভাবে এটা শুরু হলো, কেন এখনো তা চলছে—এ সব কিছু।'

'(কিন্তু) যুদ্ধ কীভাবে শেষ হবে, সেটা গোটা বিশ্বের ওপর নির্ভর করবে', যোগ করেন তিনি।

যুদ্ধবিরতির আশা-প্রত্যাশা

ট্রাম্প চান দুই পক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি চালু করুক।

এক রুশ আইনপ্রণেতা বুধবার জানান উভয় পক্ষ যুদ্ধবন্দী বিনিময় নিয়েও আলোচনা করবে।

ইউরোপের বন্ধুদের সঙ্গে জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি
ইউরোপের বন্ধুদের সঙ্গে জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি

এর আগে জেলেনস্কি বলেছিলেন, যুদ্ধবিরতি চালু না হলে তিনি আলোচনায় অংশ নিতে চান না। তবে সে অবস্থান বদলেছেন ইউক্রেনীয় নেতা। আলোচনার মাধ্যমে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়টিতে সম্মতি দিয়েছেন তিনি। অপরদিকে পুতিন শুরু থেকেই বলে এসেছেন, আলোচনার টেবিলেই নির্ধারণ হবে কবে, কতদিনের জন্য এবং কি কি শর্তে যুদ্ধবিরতি চালু হবে।

এই বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদলে থাকছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জ্যেষ্ঠ কূটনীতিবিদ স্টিভ উইটকফ ও কিথ কেলগ।

২০২২ সালের মার্চে সর্বশেষ কিয়েভ-মস্কো সরাসরি আলোচনা হয়েছিল।

ওই আলোচনায় শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পুতিন বেশ কয়েকবার পুরনো চুক্তি ঘিরে আলোচনার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

চুক্তির শর্ত ছিল ইউক্রেনকে স্থায়ীভাবে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে হবে, যার বিনিময়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশ ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এবং বেলারুশ, কানাডা, জার্মানি, ইসরায়েল, পোল্যান্ড ও তুরস্ক সহ আরও কয়েকটি দেশ তাদেরকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে।

রয়টার্সের কাছে ওই খসড়া চুক্তির একটি কপি রয়েছে।

তবে কিয়েভের কর্মকর্তারা দাবি করেন, ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার বিষয় তাদের কাছে 'লাল দাগের' মতো। তারা এ ধরনের কোনো শর্তে রাজি নন।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

2h ago