ট্রাম্পকে অভিবাদন জানানো ‘আইয়ালা’ নাচ সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান দেশটির রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে তাকে বরণ করে নেওয়া হয়।
মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের তৃদেশীয় সফরে বিশাল সব বিনিয়োগ ও অস্ত্রচুক্তির ঘোষণা আসে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের চুক্তি করে আরব আমিরাত। এই অর্থের পরিমাণ চলতি বছরের বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) চেয়ে তিন গুণেরও বেশি।
কিন্তু সব চুক্তির খবরকে ছাপিয়ে কৌতূহল জাগিয়েছে চুল দুলিয়ে নেচে ট্রাম্পকে বরণ করে নেওয়ার একটি ভিডিও।
আবুধাবিতে যে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় সেখানে দুই সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা একদল নারীকে তাদের লম্বা চুল দুলিয়ে নাচতে দেখা যায়। তাদের পেছনের সারিতে তরবারি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন একদল পুরুষ।
এই নাচের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব সম্পর্কে গালফ নিউজকে জানিয়েছেন শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম সেন্টার ফর কালচারাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের সিনিয়র প্রেজেন্টার ও প্রটোকল ম্যানেজার আহমেদ বেল জাফলাহ।

তিনি জানান, আরব অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এই নাচের নাম 'আইয়ালা'। এই নাচ তাদের দেশের সাংস্কৃতিক পরিচিতি ও মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ। দুই সারিতে দাঁড়িয়ে পরিবেশন করা এই নাচ ঐক্য এবং ঐতিহ্যের প্রতীক। একে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
তিনি আরও জানান, আরব আমিরাতে সাধারণত তিন দিন ধরে বিয়ের অনুষ্ঠান চলে। বিয়ের অনুষ্ঠানেই পরিবেশিত হয় আইয়ালা। এছাড়া, ঈদ, জাতীয় দিবস এবং রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানাতেও এই নাচের আয়োজন করা হয়।
ইউনেস্কোর তথ্য অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়াও প্রতিবেশী ওমানে আইয়ালা নাচের প্রচলন আছে। নাচের সময় দুই সারিতে মোট প্রায় ২০ জন পুরুষ মুখোমুখি দাঁড়ান। তাদের হাতে থাকে বাঁশের লাঠি, বর্শা ও তরবারি। এ সময় স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়।
পুরুষেরা গানের সঙ্গে তাদের মাথা এবং লাঠি সঞ্চালন করেন। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত নারীরা সামনে দাঁড়িয়ে তাদের লম্বা চুল একপাশ থেকে অন্যপাশে দোলাতে থাকেন।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে নারীদের চুল ঢেকে রাখার ব্যাপারে আইন থাকলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এমন কোনো বিধিনিষেধ নেই।
Comments