৩০ দিন কারাবাসে পদ হারাবেন প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে নতুন একটি বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত এই বিলে বলা হয়েছে, দেশটির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যদি কোনো গুরুতর অভিযোগে গ্রেপ্তার বা আটক হয়ে ৩০ দিন কারাগারে বন্দি থাকেন, তাহলে তারা আর পদে থাকতে পারবেন না। তাদের ওই পদ বাতিল হয়ে যাবে।
আজ বুধবার জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
আগামী সোমবার ভারতের পার্লামেন্টে এই বিল উত্থাপন করবে বিজেপি নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার।
এরপর বিলটি পার্লামেন্টারি কমিটির কাছে পাঠানো হতে পারে।
মূলত এটি একটি সংবিধান সংশোধন বিল। খসড়া বিলে সংবিধানের ২৩৯এএ অনুচ্ছেদ সংস্কারের কথা বলে হয়েছে। সংস্কারের পর ওই অনুচ্ছেদে কারাদণ্ডের কারণে মন্ত্রীদের পদ চলে যাওয়ার বিষয়টি যোগ করা হবে।
'কোনো মুখ্যমন্ত্রী যদি অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার ও আটক হন এবং টানা ৩০ দিন জেলে থাকেন, তাহলে তার পদ চলে যাবে। তবে সেই অভিযোগ গুরুতর হতে হবে, যাতে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় কারাদণ্ডের সাজার কথা আইনে বলা আছে। এ সময়ের মধ্যে যদি তিনি নিজে পদত্যাগ না করেন, তাহলে ৩০ দিন পরে তিনি আর পদে থাকতে পারবেন না।'
প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা হয়েছে।
এটাও বলা হয়েছে, ছাড়া পেলে তারা আবার ওই পদে বহাল হতে পারবেন।
ভারতের প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রীরা যদি কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত হন, তাহলে তারা সাধারণত পদত্যাগ করেন। অতীতে লালুপ্রসাদ যাদব, হেমন্ত সোরেন ও জয়ললিতা'র মতো খ্যাতিমান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা এ ধরনের দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন।

অপরদিকে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় আবগারি কেলেঙ্কারি মামলায় অভিযুক্ত অরবিন্দ কেজরিওয়াল পদত্যাগ করেননি। তিনি জেলে বন্দি থেকেও ছয় মাস মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন।
পরে তিনি পদত্যাগ করেন এবং তার দল আম আদমি পার্টির অপর নেতা অতিশি (সিং) মুখ্যমন্ত্রী হন।
এখন পর্যন্ত ভারতের ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে কাউকে জেলে যেতে হয়নি।
তবে পদ ছেড়ে দাওয়ার পর দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমহা রাও। পরে তাকে অভিযোগমুক্ত বলে ঘোষণা করে সর্বোচ্চ আদালত।
বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া
ভারতের প্রধান বিরোধী দলগুলো জানিয়েছে, আজ বুধবার তারা বৈঠক করে এ বিষয়ে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে।

তবে কংগ্রেসের রাজ্যসভা সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টে কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মণু সিংভি সামাজিক মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, 'গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কোনো নীতি নেই। বিরোধী নেতাদের যে কোনোভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। ভোটে হারাতে না পেরে কোনো বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেয়ার সেরা উপায় হবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা এবং এইভাবে (৩০ দিন কারাগারে আটকে রেখে) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া। ক্ষমতাসীন দলের কোনো মুখ্যমন্ত্রীকে কখনো গ্রেপ্তার করা হবে না।'
Wht a vicious circle! No guildelines for arrest followed! Arrests of opposition leaders rampant and disproportionate. New proposed law removes incumbent #CM etc immly on arrest. Best way to destabilise opposition is to unleash biased central agencies to arrest oppo CMs and…
— Abhishek Singhvi (@DrAMSinghvi) August 19, 2025
Comments