এসি কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

ছবি: সংগৃহীত

দেশে তাপমাত্রা প্রচণ্ড বেড়ে গেছে। তীব্র গরমে একটু প্রশান্তির জন্য অনেকেই এসি কিনতে চাচ্ছেন এখন। এক সময়কার উচ্চবিত্তদের বিলাসিতা এসি এখন উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্তের প্রয়োজনীয়তায় রূপ নিয়েছে।

দেখে নিন কী কী খেয়াল রেখে এসি কেনা উচিত-

• যে কোম্পানির এসি কিনবেন সেই কোম্পানির সার্ভিস সেন্টার আপনার শহরে আছে কি না সেটা দেখে কিনবেন। কারণ, যদি না থাকে তবে ভবিষ্যতে এসি নষ্ট হলে আপনি বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হবেন।

•  কোম্পানির 'আফটার সেল সার্ভিস' অবশ্যই দেখতে হবে। এসি কেনার পর যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয় তবে সেটি সমাধান করতে কোম্পানি কতটুকু কাজ করবে সেটা জেনে নিন।

• এসি কোম্পানির রিভিউ ও সুনামের দিকে অবশ্যই খেয়াল করবেন। মনে রাখবেন, যদি ভালো সার্ভিস দেওয়া কোম্পানি থেকে এসি না কিনে থাকেন তাহলে পরে প্রচুর বাড়তি খরচের আশঙ্কা থেকে যায়।

উইন্ডো এসি নাকি স্প্লিট এসি

এসি কেনার আগে প্রথমেই ঠিক করুন, স্প্লিট এসি নাকি ইউন্ডো এসি কিনবেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, উইন্ডো এসি কী আর স্প্লিট এসি কী? মূলত স্প্লিট এসিতে কম্প্রেসার ঘরের বাইরে থাকে বলে মেশিনের আওয়াজ শোনা যায় না। কিন্তু সমস্যা হলো, স্প্লিট এসির কম্প্রেসার বসানোর জন্য ঘরের দেওয়াল ভাঙতে হয়। দেয়াল ভাঙা নিয়ে যদি আপনার কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে নিতে পারেন স্প্লিট এসি।

অন্যদিকে উইন্ডো এসি লাগাতে গেলে একটা জানালা বন্ধ হয়ে যায়, আর এসি বন্ধ থাকলে ঘরে আলো-বাতাস ঢোকার সম্ভবনা অনেকটাই কমে যাবে।

দামের দিক থেকে উইন্ডো এসির দাম স্প্লিট এসির থেকে বেশ খানিকটা কম।

ঘরের আকার অনুসারে এসি কিনুন

এসি কেনার আগে ঘর কত স্কয়ার ফিট তা জানা দরকার। ঘরের আয়তন সর্বোচ্চ ১৪০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত হলে এক টন ক্ষমতাসম্পন্ন এসি কিনলেই চলবে। তবে ঘরের আকার যদি ১৪০ থেকে ১৯৬ স্কয়ার ফিটের মধ্যে হয় তবে দেড় টন কার্যক্ষমতার এসি কিনতে হবে। যে ঘরে এসি বসাবেন তাতে যদি জানালা থাকে তবে পছন্দ অনুসারে ভালো ব্র্যান্ড দেখে 'উইন্ডো এসি' কিনে নিতে পারেন। ঘরের আকার যদি বড় হয় কিংবা ঘরে যদি কোনো জানালা না থাকে তবে স্প্লিট এসি কিনতে হবে। মূলত বসার ঘর কিংবা অফিসের বড় রুমে ব্যবহারের জন্য স্প্লিট এসি কেনা হয়।

এসি কি ইনভার্টারসহ কিনবেন?

এসি অবশ্যই চেষ্টা করবেন ইনভার্টারসহ কিনতে। ইনভার্টার এসিতে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হয়। তাই বর্তমানে ইনভার্টার এসি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাজারে। ইনভার্টার এসির কমপ্রেসার সবসময় প্রয়োজনমতো ক্যাপাসিটিতে কমে, ঘরকে ঠান্ডা রাখে। যেহেতু এই এসির কমপ্রেসার কম ক্যাপাসিটিতেও চলতে পারে, তাই সাধারণ এসি থেকে এই এসিতে বিদ্যুৎ খরচ হয় বেশ খানিকটা কম।

মূল উপাদান

ব্লোয়ার ফ্যান এসির একটি অপরিহার্য উপাদান, যা আপনার বাড়িতে বাতাস ছড়িয়ে দেয়। যত বড় ব্লোয়ার ফ্যান তত বেশি বাতাস পাওয়া যায়। কনডেনসার কয়েল হলো আরেকটি উপাদান, যা ঠান্ডা করার গতি বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। এসি এমন হওয়া উচিত যাতে কনডেন্সার কয়েলগুলো তাপ বিনিময় করতে পারে এবং এরমাঝে ক্ষয়রোধী বৈশিষ্ট্য থাকে। ক্যাপাসিটর আরেকটি মূল উপাদান, যা সার্কিট ফেইল কিংবা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে আগুন লাগা থেকে বাঁচায়।

কোন ব্র্যান্ডের এসি কিনবেন?

কোন ব্র্যান্ডের এসি কিনবেন সেটা অবশ্যই আপনার বের করতে হবে। অল্প একটু গবেষণা করে নিন আপনার বাজেটের মাঝে কোন ব্র্যান্ডের এসি ভালো হবে। তারপর কিনুন। দেশি কিংবা বিদেশি যেকোনো ব্র্যান্ডই ভালো হতে পারে, যদি তার মাঝে উপরের বিষয়গুলো থাকে।

একটা দামি জিনিস যখন কিনবেন তখন যাচাই-বাছাই করে কিনুন। হুজুগে কিনে ফেলবেন না। কোম্পানিগুলোর মার্কেটিং দেখে ভুল জিনিস কিনে ভুলের খাতায় নাম না লিখিয়ে উপরের পয়েন্টগুলো দেখে নিয়ে তারপর এসি কিনুন। এই গরমে থাকুন স্বস্তিতে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Not going anywhere till the job is done: Adviser Wahiduddin Mahmud

When asked about the chief adviser's resignation the adviser said, 'But he did not say he was leaving'

30m ago