কর্মজীবী মা-বাবার জন্য ডে-কেয়ার কেন গুরুত্বপূর্ণ

মা-বাবা কর্মস্থলে থাকার সময়ে ডে-কেয়ার সেন্টারগুলো শিশুদের নিরাপদ রাখতে এবং যথাযথ যত্ন প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডে-কেয়ার সেন্টারগুলো নানা ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। ছবি: সংগৃহীত

কর্মজীবী মা-বাবার জন্য, বিশেষ করে একক পরিবারে, প্রতিটি সকাল এক একটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ চাকরি ও সন্তানের প্রতি দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য রাখার।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাংলাদেশের শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়ে হয়েছে ৪২ দশমিক ৬৮ শতাংশ, যা ৫ বছর আগে ছিল ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

নারীরা যত বেশি কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন, তত বেশি বাড়ছে মা-বাবা দুজনেই চাকরি করে এমন পরিবারের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক অভিভাবকই ডে-কেয়ার সেন্টারের সুবিধা নিতে শুরু করেছেন।

মা-বাবা কর্মস্থলে থাকার সময়টাতে ডে-কেয়ার সেন্টারগুলো শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করে থাকে। এসব সেন্টারের প্রশিক্ষিত কর্মীরা শিশুদের সামাজিক, মানসিক ও শারীরিক দক্ষতা বিকাশেও সহযোগিতা করে থাকে।

মা-বাবার কর্মক্ষেত্রে থাকার সময়ে সহযোগিতা ছাড়াও শিশুদের প্রাথমিক বিকাশে ডে-কেয়ার সেন্টারগুলো সহায়ক হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, এসব সেন্টারে শিশুরা অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পায় এবং একই সঙ্গে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি শিখতে পারে, যা তাদের সামাজিক দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করবে।

একইসঙ্গে, এসব সেন্টার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য শিশুকে প্রস্তুত করার জন্য পড়তে, লিখতে ও অন্যান্য দক্ষতা বিকাশ করতে সহায়তা করে। ডে-কেয়ার সেন্টারের কর্মীদের এমনভাবে শিশুদের যত্ন ও শিক্ষা প্রদানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যাতে শিশুদের সামগ্রিক মঙ্গল নিশ্চিত করা যায়। এ ছাড়া, তারা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

সার্বিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রয়োজন সত্ত্বেও দেশে মানসম্পন্ন ডে-কেয়ার সেন্টারের সংখ্যা এখনো অনেক কম। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৯৪ (১.২) অনুসারে, ৪০ জনের বেশি নারী কর্মী রয়েছে এমন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই ৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের ব্যবহারের জন্য একটি উপযুক্ত কক্ষ দিতে হবে এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। আইন থাকলেও কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডে-কেয়ার সেন্টার খুবই কম। অথচ, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাসহ ভালো মানের ডে-কেয়ার সেন্টারের প্রয়োজন এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে বেশ কয়েকটি নতুন ডে-কেয়ার সেন্টার হয়েছে যেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, বয়স উপযোগী শিক্ষা সরঞ্জাম, ডিজিটাল ও স্মার্ট অডিও-ভিজ্যুয়াল সরঞ্জাম, লাইব্রেরি, কম্পিউটার ল্যাব এবং ইনডোর ও আউটডোর কার্যক্রমের মতো সুবিধা রয়েছে। ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকা তেমনই একটি প্রতিষ্ঠান, যারা ডে-কেয়ার সুবিধা দিচ্ছে।

মা-বাবা কর্মস্থলে থাকার সময়ে ডে-কেয়ার সেন্টারগুলো শিশুদের নিরাপদ রাখতে এবং যথাযথ যত্ন প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি ভালো মানের ডে-কেয়ার সেন্টার কর্মক্ষেত্র ও সন্তানের প্রতি দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য রাখাতে অভিভাবকদের জন্য সহায়ক হতে পারে।

নুজহাত হায়াত খান একজন কমিউনিকেশন প্রফেশনাল

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

21h ago