‘কমফোর্ট জোন’ থেকে বেরিয়ে আসা কেন জরুরি

কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসা
ছবি: অর্কিড চাকমা

প্রথমবার লেখক হওয়ার জন্য চাকরির আবেদন করতে যাওয়ার সময় আমি বেশ শঙ্কিত ছিলাম। প্রথমত আমার কোনো বন্ধু এই পেশায় ছিল না এবং দ্বিতীয়ত আমি এই পেশার তেমন কাউকে চিনতামও না। তা সত্ত্বেও আমি শেষ পর্যন্ত সেখানে আবেদন করেছি। বিষয়টি যেমন ভয়ের ছিল, তেমনি আমার জন্য বেশ চমৎকার একটি অভিজ্ঞতাও ছিল। এর মাধ্যমে চমৎকার কিছু লেখকের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশে অনেক কিছু শিখেছি এবং বেশ কিছু ভালো বন্ধু পেয়েছি।

আপনি কি কখনো নতুন কোনো জিনিসে আগ্রহী হয়েছেন কিন্তু আপনার কোনো বন্ধুকে একই বিষয়ে আগ্রহী হতে দেখেননি? এটা হতে পারে নতুন কোন শখ, নতুন চাকরি অথবা নতুন দেশের ক্ষেত্রে আগ্রহ। অনেকের জন্য পরিবর্তন কিছুটা ভয়ের কারণ বা অপ্রয়োজনীয় মনে হতে হতে পারে, বিশেষত আপনি যদি আপনার অবস্থানে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকেন। তবে আপনার বর্তমান স্বাছন্দ্য আপনার সফলতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

নিজেদের ব্যক্তিগত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমরা কখনো কখনো নতুন কোনো বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হতে চাই। সেটি করার জন্য নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে এসে নিজেকে নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন চ্যালেঞ্জ এবং নতুন মানুষদের সঙ্গে মেশার সুযোগ করে দিতে হবে। সবসময় একই মানুষদের সঙ্গে ওঠাবসা করলে নতুন কিছু করার ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হতে পারে, কারণ তাদের লক্ষ্য আপনার সঙ্গে না-ও মিলতে পারে।

এ ছাড়া নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসার ইতিবাচক দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম হল নেটওয়ার্কিং। যদিও মানুষ অনেক সময় নেটওয়ার্কিংকে কম গুরুত্ব দেয়, কিন্তু এটি সফলতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কেউ যদি নতুন কোনো কিছু করার সুযোগ পায় কিন্তু নিজের গণ্ডি থেকে বের হতে না চায় তাহলে তাদের নেটওয়ার্কিংয়ের দক্ষতা গড়ে উঠবে না। অন্যদিকে যদি কেউ নিজেই নতুন মানুষদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করেন, নতুন অভিজ্ঞতার ব্যাপারে আগ্রহী হোন তাহলে তার খুব ভালো নেটওয়ার্কিং দক্ষতা গড়ে উঠবে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। যত বেশি মানুষের সঙ্গে মিশবেন আপনার দৃষ্টিভঙ্গি তত প্রসারিত হবে ও নতুন কিছু শিখতে পারবেন। এটা ঠিক যে, এই অভিজ্ঞতাগুলো সবসময় ইতিবাচক নাও হতে পারে। তবে সেই নেতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলোও আপনাকে মূল্যবান শিক্ষা দিতে পারে।

এক্ষেত্রে স্বাধীনতাও একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যা আপনি অন্যের ওপর নির্ভর না করে একাই অর্জন করতে পারেন। কাছের বন্ধুরা সবসময় একটি নিরাপদস্থল হিসেবে থাকে, তবে মাঝে মাঝে একাই নিজের ডানা প্রসারিত করে আকাশে উড়তে হয়। নাহলে এক সময় দেখবেন অন্যের ওপর বেশি নির্ভর করতে করতে নিজের স্বাধীনতা ও ভব্যিষত আকাঙ্ক্ষা কোনোটিই অর্জন করা হবে না।

পৃথিবী নতুনদের জন্য অপেক্ষা করে, যারা কিছুদিনের মধ্যেই এর হাল ধরবে। তাই নিজের গণ্ডি থেকে বের হয়ে নতুন সূচনা ও নতুন অভিজ্ঞতাকে আলিঙ্গন করার সময় এখনই।

অনুবাদ করেছেন সৈয়দা সুবাহ আলম

 

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

13h ago