টেলিফোন বা ভিডিও কলে কি বিয়ে হয়, আইনে যা আছে

ইন্টারনেট প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে কথা বলার পাশাপাশি ভিডিও কল করা যায় পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকেই। এক সময় টেলিফোনে বিয়ে হওয়ার কথা শোনা যেত। এখন মোবাইল ফোন বা ভিডিও কলের মাধ্যমে বিয়ের ঘটনা ঘটছে।
এ ধরনের বিয়ের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই প্রশ্ন আসে এর আইনগত ভিত্তি ও করণীয় প্রসঙ্গে। টেলিফোনে বা ভিডিও কলে বিয়ে করা যায় কি না, আইনে কী বলে—এই সম্পর্কে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।
ফোনে বা ভিডিও কলে কি বিয়ে করা যায়? আইন কী বলে?
ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা বলেন, পৃথিবীর দুই প্রান্তে বসবাসরত বর-কনের মধ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন ও ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রায়শই বিয়ে হচ্ছে তবে এ বিষয়ে ইউনিফর্ম বা সার্বজনীন কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে না।
বাংলাদেশে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪ অনুসারে মুসলিম বিয়ের রেজিস্ট্রেশন হয়ে থাকে। আইনগতভাবে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হয়:
১. দুই পক্ষের সম্মতি থাকতে হবে (প্রমাণযোগ্যভাবে)।
২. কাজী উপস্থিত থাকতে হবে এবং তিনি উভয় পক্ষ বা তাদের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে সম্মতি গ্রহণ করবেন।
৩. বিয়েতে অবশ্যই দুইজন সাক্ষী থাকা বাধ্যতামূলক।
৪. কাবিননামা পূরণ করে উভয় পক্ষ বা প্রতিনিধিদের সই করতে হবে।
ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা বলেন, টেলিফান, মোবাইল ফোনে বা ভিডিও কলে মৌখিকভাবে 'হ্যাঁ' বলাটা বিয়ের আইনগত রেজিস্ট্রেশনের জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ, ফোন কলে বা ভিডিও কলে অন্য সব শর্ত পূরণ করা গেলেও বিদেশে বসবাসরত বর বা কনের সম্মতি সূচক সই সংক্রান্ত শর্তটি পূরণ করা সম্ভব হয় না।
সেক্ষেত্রে টেলিফোন বা ভিডিও কলে বিয়ের উদ্দেশ্যে বিদেশে বসবাসরত পক্ষকে আম-মোক্তারনামা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নির শরণাপন্ন হতে হয়। বিদেশে বসবাসরত ব্যক্তির পক্ষে তার আম-মোক্তার কাবিননামায় সই করবেন। পরবর্তীতে প্রবাসী ব্যক্তি বাংলাদেশে এসে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করবেন।
তবে রেজিস্ট্রেশন করার আগেই অর্থাৎ বিদেশে থাকা অবস্থাতে প্রবাসী ব্যক্তিকে সেই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাস অথবা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ের ঘোষণা সত্যায়িত করতে হবে এবং সেই সত্যায়িত দলিল বাংলাদেশে বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের সময় কাবিননামার সঙ্গে জমা দিতে হবে।
Comments