শিল্পী ও সৃষ্টিশীলতার অনন্য মিলনমেলা রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম

কলাকাল এবং কালনী আর্ট স্টুডিওর উদ্যোগে কালনী স্টুডিওতে শুরু হয়েছে রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম।
কালনী আর্ট স্টুডিও থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত নারী শিল্পীদের নিয়ে ১০ দিনব্যাপী এই আয়োজন।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানটি চলবে ৯ মার্চ পর্যন্ত। এই আয়োজনে দেশের নামকরা শিল্পী ও উদীয়মান প্রতিভারা একসঙ্গে কাজ করবেন, শিখবেন এবং নিজেদের শিল্পচর্চাকে আরও সমৃদ্ধ করবেন। প্রোগ্রামটি উদ্বোধন করেছেন শিল্পী আবুল বারক আলভী, শিশির ভট্টাচার্য, আনিসুজ্জামান আনিস। রেসিডেন্সিজুড়ে থাকবেন বরেণ্য শিল্পী শহিদ কবীর, মনিরুল ইসলাম, দিলারা বেগম জলি, রশিদ আমিন, জয়া শাহরিন হক, আসমিতা আলম প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, কেবলমাত্র নারী শিল্পীদের জন্য এমন অনন্য আয়োজন বাংলাদেশে এই প্রথম। ঢাকায় এই রেসিডেন্সির সূচনার মাধ্যমে কলাকাল ও কালনী আর্ট স্টুডিওর যৌথভাবে সারাবছর এরূপ কার্যক্রম চালু রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
ঢাকার বাইরের নারী শিল্পীদেরকে বছরের শুরুতেই আহ্বান জানানো হয়েছিল, যেখানে যেকোনো শিল্পমাধ্যমে মাস্টার্স সম্পন্ন করা নারীদেরকে এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য উন্মুক্ত আহ্বান জানানো হয়। সেখান থেকে ছয়জন শিল্পীকে প্রথমবারের মতো এই প্রোগ্রামে বাছাই করা হয়েছে। তারা হলেন—মাধবী রানী নাথ, সাদিকা করিম, জয়সংগিতা ধর, তানজিমা তাবাচ্ছুম এশা, মোহসানা আহসান সাবা, কামরুন নাহার।
মূলত প্রিন্ট মেকিংকে কেন্দ্র করে করা একটি এক্সক্লুসিভ রেসিডেন্সি হিসেবে ১০ দিনের স্টুডিওর কাজগুলো বিন্যস্ত করা হয়েছে। রেসিডেন্সিতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা প্রিন্ট মেকিং, প্রযুক্তিগত বৃদ্ধি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সহযোগিতার সৃজনশীল সম্ভাবনার মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে আত্মউপলব্ধির সুযোগ পাবেন বলে আশা করছেন প্রোগ্রামের পরিচালক ও সঞ্চালকরা।

রেসিডেন্সির আকর্ষণ সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। সেগুলো হলো—
পরীক্ষামূলক মুদ্রণ তৈরির কর্মশালা: উদ্ভাবনী কৌশলগুলোর গভীর পর্যবেক্ষণ এবং বিশেষজ্ঞের নির্দেশনাসহ নতুন পদ্ধতির অন্বেষণ।
হ্যান্ডস-অন স্টুডিও অনুশীলন: নিমগ্ন শিক্ষার জন্য অত্যাধুনিক প্রিন্টমেকিং টুল এবং সংস্থান অ্যাক্সেস লাভ।
স্টুডিও ভিজিট: বিখ্যাত প্রিন্টমেকারদের কাছ থেকে শিক্ষা ও সমালোচনা গ্রহণ এবং তাদের কাজ এবং প্রক্রিয়া থেকে অনুপ্রেরণা লাভ।
গ্রুপ সমালোচনা ও আলোচনা: ধারণা বিনিময়, গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া এবং নিজস্ব নৈপুণ্যতাকে পরিমার্জন।
চূড়ান্ত প্রদর্শনী: জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত একটি পেশাদার প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পীর সামগ্রিক সৃষ্টিগুলো প্রদর্শন।
তাছাড়া দেশের বরেণ্য শিল্পীদের সঙ্গে ১০ দিন নানান আলাপচারিতার মাধ্যমে এই রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে অভিজ্ঞতা লাভ করবেন। তার পাশাপাশি এই রেসিডেন্সি প্রোগ্রামে শিল্পীরা নিজেদের শিল্পচর্চাকে নতুনভাবে আবিষ্কার করাসহ একে অপরের সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা, টেকনিক, আর গল্প শেয়ার করতে পারবেন। এক ছাদের নিচে কাজ করতে গিয়ে গড়ে উঠবে নতুন বন্ধুত্ব ও শিল্পী-সম্পর্ক, যা ভবিষ্যতে তাদের সৃষ্টিশীল যাত্রাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
এই রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম শুধুমাত্র শিল্পচর্চার জন্য নয়, বরং এটি একটি পরিসর যেখানে শিল্পীরা নিজেদের সীমানা পেরিয়ে নতুন দিগন্ত আবিষ্কার করবেন। দেশের বিভিন্ন প্রজন্মের শিল্পীদের একত্রিত করার এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
Comments