ময়মনসিংহে রবীন্দ্রনাথের অসামান্য স্মৃতি 

৯৪ বছর আগে ময়মনসিংহে এসেছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শহরের টিচার্স ট্রেনিং কলেজে আলেকজান্ডার ক্যাসেল, বটমূল স্মরণ করিয়ে দেয় এখানে সময় কাটিয়েছিলেন বাঙালির প্রাণের কবি। ময়মনসিংহে রবীন্দ্রনাথের আগমন, থাকা, অবস্থান ও সংবর্ধনার রয়েছে উজ্জ্বল এক স্মৃতি। সেই স্মৃতি আজও অম্লান- অসামান্য।

৯৪ বছর আগে ময়মনসিংহে এসেছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শহরের টিচার্স ট্রেনিং কলেজে আলেকজান্ডার ক্যাসেল, বটমূল স্মরণ করিয়ে দেয় এখানে সময় কাটিয়েছিলেন বাঙালির প্রাণের কবি। ময়মনসিংহে রবীন্দ্রনাথের আগমন, থাকা, অবস্থান ও সংবর্ধনার রয়েছে উজ্জ্বল এক স্মৃতি। সেই স্মৃতি আজও অম্লান- অসামান্য।

১৯২৬ সালে ময়মনসিংহে নাগরিকদের পক্ষ থেকে মানপত্র পাঠ করেন মহারাজা শশীকান্ত চৌধুরী। সাহিত্য সম্মিলনীর পক্ষে অভিনন্দন পত্র পাঠ করেন যতীন্দ্র নাথ মজুমদার। সেই আলাপ সেই স্মৃতি তুলে ধরছি।

ময়মনসিংহের পুরবাসীগণ, 
আজ সর্ব প্রথমে আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমি এই ক্লান্ত দেহে আপনাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে এখানে এসেছি। অনেক দিন পূর্বেই আমার আসা উচিত ছিল—যখন আমার শক্তি ছিল, স্বাস্থ্য ছিল, যৌবন ছিল, সেই সময়ে এখানে আসার হয়তো প্রয়োজন ছিল—সে-প্রয়োজন এখানকার জন্যে নয়, আমার নিজেরই জন্যে। নিজের শক্তিকে, সেবাকে সর্ব দেশে ব্যাপ্ত করার যে –সার্থকতা, সে কেবল দেশের জন্য নয়, যে সেবা করে তার নিজের পরিপূর্ণতার জন্যে। আমরা ছেলেবেলা থেকে কলকাতায় মানুষ এবং সেই দক্ষিণ বঙ্গে জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছি। বাংলার সম্পূর্ণ মূর্তি আমার ধ্যানের মধ্যে ছিল, কিন্তু প্রত্যক্ষগোচর করবার অবকাশ পাইনি। আজকে বহু পরে বহু বিলম্বে আপনাদের দ্বারে আমি সমাগত।....

ময়মনসিংহ টাউন হলে মিউনিসিপালিটির চেয়ারম্যান এবং কমিশনারবৃন্দের অভিনন্দনের প্রত্যুত্তর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এইভাবেই ভাষণ শুরু করেন। সময়টি ছিল ১৩৩২ সালের ৩ ফাল্গুন ইংরেজি ১৯২৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। সেই সময় ময়মনসিংহ-বাসীর পক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে দেওয়া অভিনন্দনপত্র বলা হয়—

কবিবর,
ময়মনসিংহের আজ বড় আনন্দের, বড় গৌরবের দিন। বাংলার কবি, ভারতের কবি, নিখিল-বিশ্বের কবি তুমি, তোমাকে আজ আমরা নিজের ঘরে আপনার করিয়া পাইয়াছি। বিংশ-সহস্র নাগরিকের শ্রদ্ধা ও প্রীতির অর্ঘ্য দিয়া তোমাকে আমরা ময়মনসিংহের হৃদয়-পুরে বরণ করিতেছি। তুমি আমাদের অন্তরের প্রণতি গ্রহণ কর –আমরা ধন্য হই।....

এখান বিশেষ একটি কথা উল্লেখযোগ্য যে কবি ঢাকা তথা পূর্ব বঙ্গে ভ্রমণে আসেন ইংরেজি ১৯২৬ সালে কিন্তু স্যার যদুনাথ সরকারকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠিতে প্রমাণ পাওয়া যায় এর বহু পূর্বে ১৯১০ সালেই কবির 'ময়মনসিংহ' আসার সম্ভাবনা ছিল।

স্যার যদুনাথ সরকার স্বনামধন্য বাঙালি ইতিহাসবিদ। তিনিই প্রথম মীর্জা নাথান রচিত বাহারিস্তান-ই-গায়বী'র পাণ্ডুলিপি ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থিত জাতীয় গ্রন্থাগারে খুঁজে পান এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন জার্নালে বাংলা ও ইংরেজিতে প্রবন্ধ লিখে বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সঙ্গে ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ১৯১০ সালের ২ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথ তাকে একটি চিঠি লেখেন যেখানে কবির ময়মনসিংহ আগমনের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ আছে যদিও তখন রবীন্দ্রনাথ ময়মনসিংহে আসতে পারেননি। ৩ ডিসেম্বর ১৯১০ (শান্তিনিকেতন, বোলপুর) তারিখের চিঠিটি "রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র ১৫ খণ্ডে রয়েছে।

বিনয় সম্ভাষণপূর্ব্বক নিবেদন--
আপনার প্রেরিত ছবিগুলি পাইয়াছি। .....ময়মনসিংহে বোধ হয় আগামী সরস্বতী পূজার সময় সাহিত্যসম্মেলন বসিবে। ডাক্তার বসু সভাপতির পদ গ্রহণ করিতে সম্মত হইয়াছেন--তিনি আমাকে সঙ্গে লইবার চেষ্টা করিবেন--সহজে নিষ্কৃতি দিবেন বলিয়া আশা করি না।...

ময়মনসিংহ আসার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকাবাসীর প্রদত্ত জাঁকজমক পূর্ণ সংবর্ধনা শেষে কবি ৩ ফাল্গুন (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে এগারোটায় ঢাকার ফুলবাড়িয়া ষ্টেশন থেকে রেলযোগে সদলবলে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওনা হন। তার দলে ছিলেন পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ইটালিয় অধ্যাপক জোসেফতুচ্চি, অধ্যাপক কারলো যারমিকি, কবির ব্যক্তিগত সচিব হিরজিভাই মরিস, অধ্যাপক নেপাল চন্দ্র রায় ও কালীমোহন ঘোষসহ আরও কয়েকজন। ময়মনসিংহ রেল ষ্টেশনে কবিকে অভ্যর্থনা জানাতে সমবেত হয়েছিল অসংখ্য মানুষ। গাড়ী থেকে নামলে তাকে পুষ্পমাল্যে ভূষিত করেন মহারাজা শশিকান্ত আচার্য চৌধুরী। ময়মনসিংহ ভ্রমণের সম্পূর্ণ সময়টি কবি ১৮৭৯ সালে ময়মনসিংহ শহরে মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য নির্মিত প্রাসাদ 'আলেকজান্ডার ক্যাসেল' থাকেন। যা কালের সাক্ষী হিসাবে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।

ময়মনসিংহে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্থানীয় বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে যান। সঙ্গে স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

পরদিন ৪ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮ টায় কবি যোগ দেন ব্রাহ্মসমাজের আয়োজিত অনুষ্ঠানে। একই দিন বিকেল সাড়ে চারটায় রবীন্দ্রনাথ উপস্থিত হন ময়মনসিংহের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ আনন্দ মোহন কলেজের পূর্ব সম্বর্ধনায়। কলেজের অধ্যক্ষ রায় বাহাদুর ডক্টর যজ্ঞেশ্বর ঘোষসহ সকল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা কবিকে অভ্যর্থনা জানান। একটি অভিনন্দন পত্রের সাথে ৬২৫ টাকার একটি তোরা বিশ্বভারতীর সহায়তায় কবির হাতে তুলে দেওয়া হয়। কবি ছাত্র-শিক্ষকদের উদ্দেশ্য দীর্ঘ ভাষণ দেন যা ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত সৌরভ ফাল্গুন সংখ্যায়, আনন্দবাজার ও প্রবাসী'র বৈশাখ সংখ্যা ছাড়াও বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়। 

কবি বলেন, "তরুণ ছাত্রগণ। তোমরা যে আমাকে তোমাদের কাছে পেয়েছ আর আমিও যে তোমাদেরই মত একজন হয়ে তোমাদের মধ্য এসেছি, সেকথা সম্পূর্ণ সম্ভব বলে মনে করতে পারছি না। কারণ উপদেষ্টা ও শ্রোতাদের ভিতর আবহমান কাল থেকে একটা ব্যবধান সৃষ্টি হয়ে আসছে যা কোনদিন যাবার নয়, আর যা চিরদিন শিক্ষককে ছাত্র হতে অনেক দূরে সরিয়ে রাখছে। আমি আজ ক্ষণকালের জন্য তোমাদের কাছে কিছু বলে যাব সেই চিরন্তন ব্যবধান অতিক্রম করার জন্য। আমি শান্তিনিকেতনের ভিতরেও এ ভেদ দূর করতে চেষ্টা করছি। যখনই সেখানকার ছাত্রদের সঙ্গে মিশতে চেয়েছি, তখনই তাদের সুখ দু:খের ভার নিয়ে মিশেছি। ...

৫ ফাল্গুন [১৭ ফেব্রুয়ারি] বিকেল তিনটায় মুক্তাগাছার 'ত্রয়োদশী সম্মিলনী'র পক্ষ থেকে মুক্তাগাছার অন্যতম জমিদার সুধেন্দুনারায়ণ আচার্য চৌধুরীর ময়মনসিংস্থ বাসভবনে সংস্কৃত শ্লোক খোদাই করা একটি রৌপ্য ফলক এবং বিশ্বভারতীর জন্য দেড় হাজার টাকার একটি তোড়া উপহার দিয়ে কবিকে অভিনন্দন জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তাগাছার সমস্ত জমিদারগণ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ। ঐদিন বিকেল ৫ টায় ময়মনসিংহ টাউন হলের সম্মুখস্থ চত্বরে শহরবাসীর কয়েক হাজার মানুষ কবিকে সংবর্ধনা জানাতে উপস্থিত হন। জনসাধারণের পক্ষ থেকে দুটি অভিনন্দন পত্র পাঠ করেন অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি মহারাজা শশিকান্ত আচার্য চৌধুরী ও সাহিত্য সম্মিলনীর পক্ষ থেকে যতীন্দ্রনাথ মজুমদার। 

৬ ফাল্গুন (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে চারটায় রবীন্দ্রনাথ স্থানীয় বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে যান। সৌরভ সাময়িকী লিখেছে—কুমারী শান্তি প্রভা রায় আবাহন সঙ্গীত পরিবেশন করেন, কুমারী কল্পনা সেন কবিকে পুষ্পমাল্য প্রদান করেন এবং কুমারী সুশীলা সেন কবিতায় অভিনন্দন পত্র পাঠ করেন। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশ্বভারতীর সহায়তায় একটি অর্ঘ্যপাত্র, চন্দনের বাটি এবং একশত টাকা উপহার দেওয়া হয়। বিদ্যাময়ী বালিকা বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে কবি সিটি স্কুল পরিদর্শনে যান এবং ছাত্রদের উদ্দেশ্য উপদেশমূলক ভাষণ দেন। তারপর সেখানেই কবিকে শহরের শিক্ষিত মহিলাদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। দুইটি বিদ্যালয় এবং মহিলা সমিতিতে রবীন্দ্রনাথ যে ভাষণ দেন তা ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত 'সৌরভে' ফাল্গুন সংখ্যায় মুদ্রিত হয়। 

৭ ফাল্গুন (১৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রবীন্দ্রনাথ ট্রেন যোগে ময়মনসিংহ থেকে আঠারবাড়ী'র উদ্দেশ্য রওনা দেন। আঠারবাড়ীর জমিদার প্রমোদচন্দ্র রায়চৌধুরী একসময় শান্তিনিকেতনে পড়াশুনা করেছিলেন। প্রাক্তন ছাত্রের আমন্ত্রণেই কবি এখানে আসেন। 

ময়মনসিংহে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই আলেক্সান্দ্রা ক্যাসল বা লোহার কুঠিতে এসেছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

আঠারবাড়ী ষ্টেশনে এবং রাজবাড়িতে স্থানীয় জনসাধারণ কবিকে বিপুল সংবর্ধনা জানান। রেলস্টেশনে সমবেত হয় হাজার হাজার মানুষ। ট্রেন ষ্টেশনে পৌঁছালে বিশাল পটকা ফাটান হয় দেওয়া হয় শঙ্খধ্বনি-- হাতী, ঘোড়া, ব্যান্ড পতাকা সহযোগে বিশাল মিছিল কবিকে নবনির্মিত প্রাসাদে নিয়ে যায়--কবি একটি সোনার চাবি দিয়ে প্রাসাদের দ্বারোদঘাটন করেন। উদ্বোধন করেন জমিদারের নামে নির্মিত একটি নতুন 'প্রমোদ লাইব্রেরি'। আঠারবাড়ি থেকে কবি যাত্রা করেন কুমিল্লার উদ্দেশ্য। আঠারবাড়ী আসার পথে তিনি গৌরীপুর এবং যাবার সময় কিশোরগঞ্জে ষ্টেশনে থামেন এবং জনতার উদ্দেশ্য সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। দুটি ষ্টেশনেই কবির কথা শুনতে সমবেত হন হাজার হাজার জনতা।

ময়মনসিংহে রবীন্দ্র চর্চা

কবির সঙ্গে বৃহত্তর ময়মনসিংহের উল্লেখযোগ্য মানুষের নিবিড় যোগাযোগ ছিল এবং কবির রচনাতেও বহুবার বৃহত্তর ময়মনসিংহের কথা এসেছে। অন্যদিকে নেত্রকোনার সন্তান শৈলজা রঞ্জন মজুমদার ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ম্নেহভজন। যিনি ছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ, রবীন্দ্র সংগীত প্রশিক্ষক, রবীন্দ্র সংগীতের স্বর-লিপিকার এবং বিশ্বভারতীর রসায়ন বিজ্ঞানের শিক্ষক।

গৌরীপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী'র, দার্জিলিং-এর কালিম্পং-এ বাংলো ছিল 'গৌরীপুর লজ' যেখানে রবীন্দ্রনাথ অনেকবার অবস্থান করেছেন এবং কোলকাতায় তার বাড়ি 'গৌরীপুর হাউসে'ও কবির যাতায়াত ছিল। 

কিশোরগঞ্জের মসুয়ার জমিদার উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী পরিবারের সাথে কবির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। উপেন্দ্রকিশোর রায় এর সন্তান সুকুমার রায় এবং তার পুত্র সত্যজিৎ রায়ের সাথে –অর্থাৎ এই তিন প্রজন্মের সাথেই রবীন্দ্রনাথের যোগাযোগ ছিল।

ময়মনসিংহে সব সময়ই কবির জন্মদিনটি খুব ঘটা করে পালিত হতো। তার প্রমাণ আছে রবীন্দ্রনাথকে লেখা রবীন্দ্র ভক্ত চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়-এর (যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাষক ছিলেন) পত্রে, পত্রটি লেখার তারিখ ছিল ১৯২৭ সালের ১২ মে /বাংলা ১৩৩৪ সালের ২৯ বৈশাখ। 

শ্রীচরণকমলে
ভক্তি পূর্ণ প্রণাম পূর্বক নিবেদন, ময়মনসিংহে আপনার জন্মদিন সমারোহে সুসম্পন্ন হলো। এই উৎসবের প্রধান উদ্যোগী সেখানকার উকিল শ্রীযুক্ত প্রফুল্লকুমার বসু ও তাঁর পত্নী শ্রীমতী নীহারকণা; উৎসবের সমস্ত ব্যয় এঁরাই বহন করেছেন। 

ময়মনসিংহে আরও অনেকের সঙ্গে পরিচয় হলো যারা আপনার বিশেষ ভক্ত। তাঁদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য রায় সাহেব শ্রীযুক্ত উমেশচন্দ্র চাকলাদার এবং শ্রীযুক্ত হরানন্দ গুপ্তের কন্যা শ্রীমতী শোভনা গুপ্তা। 

সম্প্রতি হরানন্দবাবুর বাড়ীতে চুরি হয়ে গেছে; চোর তাঁদের সর্বস্ব নিয়ে গেছে। একটি সুটকেস খুলতে না পেরে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল; সেই সুটকেসে আপনার কতগুলি চিঠি ছিল, সেই গুলি অপহৃত বা দগ্ধ হয়নি। এতে শোভনা আনন্দিত হয়ে পিতাকে বলেছিলেন—বাবা, গহনা কাপড় জামা গেছে, আবার হবে; কিন্তু চিঠিগুলি গেলে যে ক্ষতি হতো তা তো পূরণ হতো না। চিঠিগুলি যে বেঁচেছে এই আমাদের পরম লাভ ও আনন্দের বিষয়!
শোভনার এই উক্তি ময়মনসিংহময় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

সেবক
চারু বন্দ্যোপাধ্যায়

এইভাবে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নানান সময়ে কথা বলেছেন তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্য। প্রসঙ্গে এলে প্রশংসা করেছেন ময়মনসিংহের সাহিত্য সংস্কৃতির। এতে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন স্থানীয়রা। সূচনা হয়েছে সাহিত্যের নতুন যুগের ।

তথ্যসহায়ক

১. রবীন্দ্রজীবনী(তৃতীয় খণ্ড, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, বিশ্বভারতী গ্রন্থবিভাগ,   কলকাতা
২. রবিজীবনী(নবম খণ্ড), প্রশান্তকুমার পাল, আনন্দ পাবলিশার্স লিমিটেড, কলকাতা
৩. ময়মনসিংহে রবীন্দ্রনাথ, আলি আহাম্মদ খান আইয়োব, শোভা প্রকাশ, ঢাকা
৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড), বিশ্বভারতী গ্রন্থবিভাগ, কলকাতা
৫. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠিপত্র (১৫ খণ্ড), বিশ্বভারতী গ্রন্থবিভাগ, কলকাতা

Comments

The Daily Star  | English

Hajj primary registration deadline set for October 23

The Religious affairs ministry today advised prospective Hajj pilgrims to complete primary registration for next year's Hajj by October 23.

14m ago