বঙ্গবন্ধুর জেলজীবনে তার বাবার সংগ্রাম

শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চিন্তা, আদর্শ, দর্শন ও কৌশলের একনিষ্ঠ সমর্থক। ছিলেন পুত্রের প্রতি গভীর ভালোবাসায় অনুরক্ত এবং আদর্শ বাস্তবায়নে সার্বক্ষণিক সঙ্গী।
জন্মদিনে পিতাপুত্র। ছবি: বাংলার বাণী, ১৮ মার্চ ১৯৭৫

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক জীবনে অনেক ত্যাগ অনেক সংগ্রাম। আমরা কতটা জানি। যেমন তার রাজনৈতিক জীবনে সর্বমোট ৩ হাজার ৫৩ দিন কারাভোগ তথা অন্ধকারে কাটিয়েছেন। এর মধ্যে স্কুলের ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশ আমলে প্রতিপক্ষের মামলায় গোপালগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হয়ে পাঁচ দিন কারাভোগ করেন। বাকি ৩ হাজার ৪৮ দিন তিনি কারাভোগ করেন পাকিস্তান সরকারের সময়। 

বঙ্গবন্ধু প্রথম কারাবরণ করেন ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে পড়ার সময়। এরপর ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের জন্য সচিবালয় গেট থেকে গ্রেফতার হয়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত তিনি পাঁচ দিন কারাগারে ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারীদের ধর্মঘটে সমর্থন দেওয়ায় ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল আবার গ্রেফতার হয়ে ২৮ জুন পর্যন্ত কারাভোগ করেন ৭১ দিন। গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের দায়ে ১৯ জুলাই গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেন এক দিন। একই বছরের ১৯৪৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর আরমানিটোলায় আওয়ামী লীগের জনসভায় সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রদানের জন্য ঢাকার মোগাটুলি থেকে গ্রেফতার হয়ে ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ৭৮৯ দিন কারাগারে ছিলেন।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পরও বঙ্গবন্ধুকে কারাগারে যেতে হয়। ওই বছরের ৩০ মে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে সংঘর্ষের যোগসূত্র থাকার কারণে গ্রেফতার হয়ে ১৯৫৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু টানা ২৬৫ দিন কারাভোগ করেন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক আইন জারির পর বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন ১২ই অক্টোবর। ওই দিন থেকে দুর্নীতি দমন মামলায় টানা ৪৩৪ দিন কারাগারে কাটিয়ে মুক্তি পান ১৯৫৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর। এরপর ১৯৬২ সালের ৬ জানুয়ারি সরকারবিরোধী কাজের কারণে ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয়ে মুক্তি পান ওই বছরের ১৮ জুন। এ দফায় তিনি কারাভোগ করেন ১৬৩ দিন। এরপর ১৯৬৪ সালের ৩১ মে, ৩ জুন, ৭ নভেম্বর এবং ১৯৬৬ সালের ২৮ জানুয়ারি ও ১৮ এপ্রিল একদিন করে কারাবরণ করেন। একই বছরের ২১ এপ্রিল সিলেটে জজকোর্টের গ্রেফতারি পরোয়ানায় ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত।

ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৬ সালের ৭ এপ্রিল পাবনায় সরকারবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার জন্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে গ্রেফতার হয়ে ১৯৬৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ৬১৯ দিন কারাবরণ করেন। এরপর আগরতলা 'ষড়যন্ত্র' মামলায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটক থেকে গ্রেফতার হন ১৯৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারি। একটানা ৪০২ দিন কারাভোগের পর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তি লাভ করেন ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই পাকিস্তান সরকার তাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এ দফায় তিনি কারাগারে ছিলেন ২৮৯ দিন। (৩০৫৩ দিন, জার্নি মাল্টিমিডিয়া)।

পাকিস্তান আমলের পুরোটা সময় বঙ্গবন্ধু পরিবারের জন্য ছিল ধারাবাহিক এক দুঃখের গল্প। এই গল্পের প্রতিটি মানবচরিত্র সেসময় নিদারুণ দুঃখ ভোগ করেছেন। ভোগ করেছেন মানসিক যন্ত্রণা। সারাক্ষণ থেকেছেন উদ্বিগ্ন। ভুগেছেন অনিশ্চয়তায়। এই যে দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা-উদ্বিগ্নতা-অনিশ্চয়তা এর মূলে ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাকে ঘিরেই আবর্তিত হতো প্রতিটি দিন। দিনের প্রতিটি ক্ষণ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যিনি সবচেয়ে বেশি চিন্তায় থাকতেন তিনি তাঁর পিতা শেখ লুৎফর রহমান। কারণ বঙ্গবন্ধুর জেলজীবনে তাকেই তাঁর পুত্রের স্ত্রী-সন্তানদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সকল দায়িত্ব পালন করতে হতো। 

রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ পূর্ব বাংলার সর্বত্র সাধারণ ধর্মঘট আহ্বান করে। কিন্তু পূর্ব বাংলার সরকার বাংলা ভাষার আন্দোলনকে প্রচার করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে। সরকারি পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ করে ছাত্রদের মিছিল ও সমাবেশে। এই আন্দোলনে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সম্মুখ সারির নেতা। সাধারণ ধর্মঘট পালনকালে ওইদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

শেখ মুজিবুর রহমানকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন গোপালগঞ্জে। ছেলেকে গ্রেফতারের খবর শুনে তিনি খুবই বিচলিত হন এবং মুষড়ে পড়েন। গ্রামের এক ছাত্রের মুখে শুনলেন খোকাকে ৩-৪দিন পর জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। খবর শুনে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন ঢাকায় যাবেন। তখন পাটগাতি হয়ে লঞ্চ, স্টিমার ঢাকায় চলাচল করত। তিনি খোকার ছাড়া পাওয়ার সংবাদ শুনে স্টিমারে চেপে বসলেন। খোকার মা সায়েরা খাতুন, বড়োবোন ও সন্তানেরা শেখ লুৎফর রহমানকে বিদায় জানালেন। 

লুৎফর রহমান স্টিমারে বরিশাল হয়ে এলেন ঢাকার সদরঘাটে। জায়গাটি তার কাছে সম্পূর্ণ অচেনা। তিনি সদরঘাট থেকে হেঁটে পুরাতন ঢাকার নাজিমুদ্দীন রোডের জেলখানার সামনে এলেন। তখন সকাল ১০টাও বাজেনি। জেলগেটের সামনে সাধারণ কোনো লোকজন নেই। আছে শুধু প্রহরী। গেটে গিয়ে বললেন, আজ জেল থেকে রাজবন্দিদের মুক্তি পাওয়ার কথা আছে। প্রহরী শেখ লুৎফর রহমানের বেশভূষা দেখে সমীহ করে বললেন, জেলে কি আপনার কোনো কয়েদি আছে?

লুৎফর রহমান বললেন, আছে, আমার ছেলে। ছেলের সঙ্গে অনেক লোকজনও আছে। দেশে বসে শুনেছি সরকার তাদের আজ ছেড়ে দেবে। 
প্রহরী বলল, আপনি কোথা থেকে এসেছেন? আপনার ছেলের নাম কী?
আমি ফরিদপুরের গোপালগঞ্জ থেকে এসেছি। আমার ছেলের নাম মুজিবুর রহমান। পলিটিক্স করে।
এবার বুঝলাম। উনি রাজবন্দি। ঠিক আছে আপনি সামনের ওই টুলটায় বসুন। রাজবন্দিদের দুপুর দুইটার পরে ছাড়ে। কোর্টের অর্ডার আসতে দেরি হয়।

বেলা দুইটার পরপর হবে। জেলগেটে বেশ কয়েকটি গাড়ি এসে থামলো। সব গাড়িতেই লোকজন ভরা। তারা লুৎফর রহমানের অচেনা। তবে লুঙ্গিপরা আধাবয়সী একজনকে তার চেনা চেনা লাগছে। কোথায় যেনো দেখেছে। একটি গাড়িতে কয়েকটি গাঁদা ফুলের মালা। লুৎফর রহমান ভাবলেন- আজ যারা মুক্তি পাবে তারা নিশ্চয় রাজবন্দি এবং সবার পরিচিত মানুষ। তাই জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়া হবে।

শেখ লুৎফর রহমান আবার ভাবলেন- খোকা যদি আজ না ছাড়া পায়! তাহলে তো মনে কষ্ট নিয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে হবে। আবার কীভাবে সংবাদ পাবেন, কীভাবে আবার আসবেন- এসব ভাবতে ভাবতে জেলের বিরাট গেট খুলে গেল। গেটের আশপাশে জেলপ্রহরী ও পুলিশের কমতি নেই। শেখ লুৎফর রহমান গেটের কাছাকাছি গেলেন। সামনে অনেক মানুষের ভিড়। লুঙ্গিপরা সেই মানুষটিও অনেক মানুষের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেকে বলাবলি করছেন, মানুষটি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। শেখ লুৎফর রহমান দেখলেন গেট দিয়ে মাত্র দুজন রাজবন্দি বের হয়েছে। একজন তার খোকা। অন্যজন তার অচেনা। তিনি পরে জেনেছিলেন খোকার সঙ্গে মুক্তি পাওয়া ওই রাজবন্দির নাম বাহাউদ্দিন। বাড়ি বরিশালে।

শেখ লুৎফর রহমানের আদরের খোকা ও খোকার সঙ্গে থাকা মানুষটি গেটের বাইরে এলেন। আসতেই গেটের সামনে দাঁড়ানো মানুষগুলো ফুলের মালা নিয়ে ছুটে গেলেন তাদের কাছে। দুজনের গলায় পরিয়ে দেওয়া হলো ফুলের মালা। সবার কণ্ঠে স্লোগান। খোকা একটু সামনে এগিয়েই দেখলেন- মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। দাঁড়িয়ে আছেন তার প্রাণপ্রিয় বাবা। বাবাকে দেখে খোকা সঙ্গে সঙ্গে সালাম করলেন। সালাম করলেন মওলানা ভাসানীকেও। খোকা ভিড়ের মধ্যে আরও দেখলেন- আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক দাঁড়িয়ে। তিনি তাকে জড়িয়ে ধরলেন। আনন্দ প্রকাশ করলেন।

শেখ লুৎফর রহমান অবাক বিস্ময়ে দেখে খোকার জনপ্রিয়তার কথা ভাবছিলেন। খোকার নেতা হয়ে ওঠার কথা ভাবছিলেন। পরে সবাই গাড়িতে উঠে বসলেন। খোকার বাবাও চললেন তাদের সঙ্গে। প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন- 'আমি আব্বাকে বললাম, "আপনি বাড়ি যান, আমি সাত-আট দিনের মধ্যে আসছি।" আমার টাকার দরকার, বাড়ি না গেলে টাকা পাওয়া যাবে না। বৃদ্ধা মা, আর স্ত্রী ও মেয়েটিকে দেখতে ইচ্ছা করছিল।' 

বাবার আদরের 'খোকা' আজ ঢাকা জেলে তো কাল ফরিদপুর জেলে। আবার কখনো খুলনা জেলে তো আবার কখনো সিলেট জেলে। আজ এ জেলে ৭ দিন তো অন্য জেলে আশি দিন। মাঝে-মধ্যে বঙ্গবন্ধুর কোনো খোঁজই পেতেন না তিনি। কোন জেলে বন্দি আছেন কারো কাছে কোনো তথ্য পেতেন না। ছেলের খোঁজে তিনি ঘুরে বেড়াতেন এ-জেল ও-জেল।

'১৯৪৯ সালের ৮ই জুন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি শেখ মুজিব। ছেলেকে নিয়ে বাবা শেখ লুৎফর রহমানের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। তিনি টুঙ্গিপাড়া থেকে ছেলেকে দেখতে ঢাকা এসেছেন। আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো নয়। ঢাকায় উঠেছেন ১২ অভয় দাস লেনের বাড়িতে, যেখানে থাকেন শেখ মুজিব। কারাগারে গিয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করার জন্য আইবির স্পেশাল অফিসারের কাছে আবেদন করেছিলেন। মৌখিক আবেদন নয়, লিখিত। অনুমতি পেয়ে দেখা করতে গেলেন কারাগারে। সেদিন ছিল অপরাধীদের সঙ্গে সাক্ষাতের দিন। জেলগেটে অসম্ভব ভিড়। কেবল মানুষ আর মানুষ। ঠেলাঠেলি করে ভিতরে ঢুকতে তাঁর অনেক কষ্ট হলো। দাঁড়ালেন নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে গিয়ে।

এলেন শেখ মুজিব। ছেলেকে দেখে লুৎফর রহমানের বুকটা হু হু করে ওঠে। ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেন অশ্রু। তিনি দেখলেন ছেলের শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তার ওপর ডান হাতে চোট পেয়েছেন। ছেলের সঙ্গে কথা বলে তিনি ফিরে এলেন। কিন্তু তাঁর মনে শান্তি নেই। আগামীকাল আরেকবার দেখা করার জন্য মন ছটফট করতে লাগলো।

শেখ লুৎফর রহমান আইবির স্পেশাল অফিসারের কাছে পুনরায় আবেদন করলেন। আবেদনের লিখলেন, আগামীকাল সকালে জামাতা এস হোসেন মিয়াসহ (মৌলভি সৈয়দ হোসেন মিয়া) তিনি ছেলের সঙ্গে আরেকবার দেখা করতে চান। ১০ তারিখে দেখা করার অনুমতি পেলেও দেখা হলো না। দেখা হলো ১১ জুন বিকেল চারটায়। যথারীতি সঙ্গে আছেন জামাতা এস হোসেন। নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে দাঁড়ালেন দুজন। ভেতর থেকে এলেন শেখ মুজিবুর রহমান। লুৎফর রহমানের পাশেই দাঁড়িয়ে গোয়েন্দা অফিসার এম হোসেন। পিতা-পুত্রের কথোপকথন খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। হাতে খাতা-কলম। কোনো রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বললেন না।

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কথা বলে জামাতাকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন লুৎফর রহমান। আজই তিনি টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। ছেলের সঙ্গে কথা বলতে পেরে তিনি আনন্দিত। কিন্তু দুশ্চিন্তা হচ্ছে ছেলের মুক্তি নিয়ে। কবে মুক্তি পাবেন ঠিক নেই।' (সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) 

শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক চিন্তা, আদর্শ, দর্শন ও কৌশলের একনিষ্ঠ সমর্থক। ছিলেন পুত্রের প্রতি গভীর ভালোবাসায় অনুরক্ত এবং আদর্শ বাস্তবায়নে সার্বক্ষণিক সঙ্গী। পুত্রের সঙ্গে চিন্তাগত ঐক্য এবং সহমর্মিতা থাকার কারণে ছিলেন পাশে, সারথী হয়ে। পুত্রের খোঁজে ঘুরেছেন জেল থেকে জেলে। জেলখানায় পুত্রের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ, অপমান, কষ্ট, যন্ত্রণায় তিনিও সমব্যথী হয়েছেন। সবসময় থেকেছেন পুত্রের মুক্তির প্রতীক্ষায়। অপার ধৈর্য, সহনশীলতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে পুত্রের জন্য কাজ করেছেন। পুত্রের প্রতি শেখ লুৎফর রহমানের ছিল অগাধ বিশ্বাস এবং আস্থা। বঙ্গবন্ধুও তার পিতার প্রতি ছিলেন অনুরক্ত, নিবেদিত এবং শ্রদ্ধাশীল।

তথ্য সহায়ক

শেখ মুজিবুুর রহমান, অসমাপ্ত আত্মজীবনী, দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, ২০১২
নাজমুল হোসেন (সম্পা.), ৩০৫৩ দিন, জার্নি মাল্টিমিডিয়া, ২০১৮
শেখ হাসিনা (সম্পা.), সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, হাক্কানী পাবলিশার্স, ২০১৮

Comments