ভারতের মণিপুরে সহিংসতায় ১১ জন নিহত

ভারতের সেনাবাহিনী মণিপুর থেকে বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যায়। ছবি: এএফপি
ভারতের সেনাবাহিনী মণিপুর থেকে বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যায়। ছবি: এএফপি

 ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে চলমান সহিংসতায় ১১ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রায় ১ মাসের বেশি সময় ধরে মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলে আসছে। অগ্নিকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনায় অনেক মানুষ নিহত ও গৃহহীন হয়েছেন।

সে সময় থেকে এই রাজ্যের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। সরকার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে এবং সহিংসতা যাতে অন্যান্য রাজ্যে ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে মণিপুর থেকে অন্য স্থানে যাত্রার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

সর্বশেষ সহিংসতার ঘটনাগুলো এতোটাই ভয়াবহ যে কিছু মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে অবস্থিত জওহরলাল নেহেরু ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (জেএনআইএমএস) ও রাজ মেডিসিটি হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মকর্তারা সিএনএনকে এ বিষয়টি জানিয়েছেন।

জেএনআইএমএসের পরিচালক ড. দেবেন বলেন, 'আমাদের কাছে যেসব মরদেহ এসেছে, সেগুলোর অবস্থা বেশি ভালো না। মরদেহে অসংখ্য কাটা, ছেঁড়া, ক্ষতস্থান ও আঁচড়ের দাগ রয়েছে।'

'আমরা এখনো একজন মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানার জন্য ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু তার মুখমন্ডল ক্ষতবিক্ষত হয়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় কাজটা কঠিন হয়ে পড়েছে।'

মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী প্রদেশ মণিপুরে বেশ কিছু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে, যাদের অনেকের আদি বাসস্থান চীন ও তিব্বত। তাদের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মবিশ্বাস রয়েছে।

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার ২ বছর পর ১৯৪৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় মণিপুর।

তবে রাজ্যের অনেকেই এটি মেনে নিতে পারেননি। সে সময় থেকেই এ অঞ্চলে সহিংস বিদ্রোহ ও নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চলে আসছে। যার ফলে গত কয়েক দশকে শত শত মানুষ হতাহত হয়েছেন।

চলমান বিক্ষোভে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে মণিপুরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার জন্ম নিয়েছে। যার ফলে এ রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমালোচিত হয়েছেন।

মোদি এখনো চলমান সহিংসতা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। গত মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর সফর করলেও সহিংসতার আগুন নেভেনি।

বিরোধীদলের রাজনীতিবিদরা মোদি ও বিজেপির বিরুদ্ধে এ বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন।

সোমবার প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এক বিবৃতিতে বলেছে, 'রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো উদ্যোগ মণিপুরের বাসিন্দাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়নি।' দলটি মোদিকে 'নীরবতা ভাঙার' ও রাজ্য সফর করার আহ্বান জানিয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Election Roadmap: BNP unhappy as Yunus gives no specific timeline

The election must be held by December, as any delay could cause the situation to spiral out of control, the BNP said after a meeting with the chief adviser yesterday.

9h ago